” BTS “ এর সাংস্কৃতিক আগ্রাসন : কোন পথে আমাদের যুবসমাজ !


” BTS  এর সাংস্কৃতিক আগ্রাসন : কোন পথে আমাদের যুবসমাজ !

BTS বর্তমান বিশ্বের বহুল আলোচিত একটি শব্দএটি সাউথ কোরিয়ান জনপ্রিয় হিপ-হপ মিউজিক ব্রান্ড দলবিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও তাদের প্রচুর ফ্যান রয়েছেযাদের মধ্যে তরুণ-তরুণী যুবক-যুবতী, কিশোর-কিশোরীএদের অধিকাংশের বয়স আবার ১৩-২৩ এর মধ্যে

বিশেষ করে মুসলিম টিনেজদের একটা বড় অংশ BTS এর প্রতি খুব আসক্ত হয়ে পড়েছে। যাদের সামনে BTS সম্পর্কে বিরুপ মন্তব্য করা দুষ্কর। এটা সাভাবিক যে, আমরা যাকে বা যাদেরকে ভালোবাসি তাদের সম্পর্কে নেগেটিভ কথা শুনতে আমরা মোটেই প্রস্তুত নই, যদিও সেটা সত্য হয়। আর ইয়োথদের এই ইমোশনকে কাজে লাগিয়ে কোরিয়ান POP Industry প্রতি বছর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিচ্ছে।  

প্রিয় মুসলিম ভাই-বোন! কারো প্রতি ইমোশন থাকাটা স্বাভাবিক কিন্তু সেটা যদি ক্ষতির কারণ হয় তাহলে আর সেটা সাভাবিক থাকে না বরং অসাভাবিক হয়ে যায়।  একজন সচেতন মুসলিম হিসেবে আপনার সামনে BTS সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি তুলে ধরার চেষ্টা করবো ইনশা আল্লাহ।

Ø  BTS পরিচিতি:

BTS এর পূর্ণরুপ হলো- Bangtan Sanyeondan. কোরিয়ান ভাষায় যার অর্থ হলো bulletproof boy scouts. তারা Bangtan Boys নামে পরিচিত। BTS এর ফ্যানরা নিজেদেরকে BTS Army বলে পরিচয় দেয়। ২০১০ সালে Big hit Entertainment ( Music & Artist for hearling) এই Boy band দলটি গঠন করে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সাতজন। তারা হলো- Jin, Suga, J-Hope, RM, Jimin, V, Jungkook.

২০১৩ সালে তাদের প্রথম অ্যালবাম 2 Cool 4 Skool বের হয়। ২০১৩-২০২১ অবধি তাদের অ্যালবামের সংখ্যা ছিল ৩১টি। তন্মধ্যে Map of the Soul, I need you, Fake ove, Bulter, Dynamic ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয়।

Ø  লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে:

BTS দের প্রধান টার্গেটই Youth ( ‍যুবক-যুবতী, কিশোর-কিশোরী,তরুন-তরুনী ) এজন্য তারা তাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামে ইয়োথদের নিয়ে লেখা দেখবেন। Youtube গিয়ে  “For youth BTS” লিখে সার্চ দিলে বোঝা যায়। তাদের উদ্দেশ্য স্রেফ ব্যবসা করা আর তরুণ-তরুণীদের মাইন্ড কন্ট্রল ও ব্রেন ওয়াশ করার মাধ্যমে বিশেষ কিছু লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা। আমরা এপর্যায়ে সে সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করবো। প্রিয় মুসলিম ভাই-বোন একটু জানার উদ্দেশ্যে পড়ার চেষ্টা করবেন বলে আশা করছি।

Ø  BTS এর মাধ্যমে Satainic( শয়তানের ) ধর্ম প্রচার করা:

ILLUMINATE একটি সংঘবদ্ধ সংগঠন যারা পরোক্ষভাবে বিশ্বের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়, মিডিয়া, টেকনোলজি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাদের উদ্দেশ্য গোটা মানবজাতিকে One Government এর কর্তৃত্বে নিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা। এলক্ষ্যে তারা বড় বড় এজেন্ডা নিয়ে তা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। তারা মূলত Satanic ধর্মের অনুসারী। Satanic ধর্মে GOD হিসেবে শয়তান ইবলিশকে মানা হয়। যাকে তারা Lucifer বলে ডাকে। তারা জাদু, কালো জাদু চর্চার মাধ্যমে শয়তানের সাথে যোগাযোগ করে থাকে।

BTS এর “Fire Song” এ, “Fake love” Song এর intro তে যে কালো হুডি পরিহিত মানুষদের দেখানো হয়, তা মূলত সদস্যদের বোঝায়। এরা “Not today তেও আছে।

কালো হুড্ডি পরিহিত

                    
গান থেকে নেয়া হয়েছে।

“Blood Sweat and tears” Song এ ডেভিলের মূর্তি বা শয়তানের মূর্তি দেখতে পাবেন। এ গানে বলা হয় My blood sweat tears, my cold breath too just take. মানে আমার রক্ত, ঘাম, অশ্রু, ঠান্ডা শ্বাস সব নিয়ে নাও। এগুলো শয়তানকে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এখানে Blood (আপনার জীবন), sweat=work (শ্রম), Tears অশ্রু (অনুভূতি), সব শয়তানের কন্ট্রোলে দিয়ে দিতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

               

                                                                               

”শয়তানের কাছে মানুষ আত্মা বিক্রয় করে দেয়” এটা এক চরম সত্য। Satanic ধর্মে বা কালো জাদুর চর্চা যারা করে তারা এরকম করে থাকে। শয়তানের সাথে চুক্তি করা লাগে। চুক্তিতে নিজের রক্ত দিয়ে স্বাক্ষর করতে হয়।

এ গানটি খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করলেই এটা বুঝতে পারবেন। আরও আছে “And my body mind soul “ সবকিছু নিয়ে নাও। কারণ এরা শয়তানকে God মানে এবং শয়তানের রাজত্ব এই পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে চায়। ILLUMINATE এভাবে মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে।            

·         এ গানেই আপনি দেখতে পাবেন কালো ডানা বিশিষ্ট মূর্তি (শয়তান )।

·         দেখতে পাবেন দু’জন ছেলে মুখোমুখি হয়ে হাটু গেড়ে বসে প্রার্থনা করছে।

Ø  সমকামিতাকে প্রোমোট করা:

এটা খুবই স্পষ্ট যে, এই কানফুরানো, দাড়িবিহীন, মেয়েদের মতো দেখতে ছেলেগুলোকে দিয়ে POP Indusrty গুলো সমকামিতাকে প্রোমোট করছে। মানে ছেলে-ছেলে, মেয়ে-মেয়ে যৌন সম্পর্ক করা।

 Search দিবেন – KPOP idols kissing, Times male idols completely “Fan service” , Vixx-BTS, TEEN TOP, Seven TEEN, Deahyun & Zelo (BAP), SONAMOO, Sowun & Yerin.

সমকামিতা উৎসাহ দেয়ার কিছু পিকচার


ছেলে ছেলেকে কিস করছে।

মূর্তিকে কিস করছে। 

ছেলে ছেলেকে কিস করছে। 

মেয়ে মেয়েকে কিস করছে। 

কালো ডানাবিশিষ্ট শয়তান:

“Blood, sweat & tears” song এ অনেক জায়গায় দেখতে পাবেন। BTS এর Logo (ছবি) তেই রয়েছে শয়তানের ডানা।

·         Having Dinner in Hell !


জাহান্নামের মধ্যে বসে তারা খাবার খাচ্ছে! তারা জাহান্নামকে আরামদায়ক মনে করে।  এভাবে তারা মানুষকে দাজ্জালের অনুসারী হওয়ার প্রতি উৎসাহ দেয়। 

·         Illuminate ট্যাটু

গায়ে ট্যাটু যুক্ত।   আমাদের অনেক যুবক শরীরে ট্যাটু থাকে। 

·        আমাদের দেশে বিভিন্নভাবে তাদের চিহ্ন এক চোখ বা ট্যাটুর ব্যবহার লক্ষ্যনীয়।  বিশেষ করে নাটকে!

                   Mind Control ট্যাটু 

এমন অনেক ট্যাটু আমাদের কমলমতি শিশুদের ব্যবহার করতে দেখা যায়।

Illiminate এর বড় প্রজেক্ট এর একটি হলো Illiminate. তারা বিশ্ব মিডিয়া, Entertainment সেক্টর, Music Industry গুলো, Movie and Film Industry গুলোকে এই Mind Control এর হাতিয়ার বানিয়েছে।

Ø  এক চোখ প্রদর্শন:

এই যে শয়তানের এত পরিকল্পনা, one government দ্বারা বিশ্ব নিয়ন্ত্রন প্রচেষ্টা, তরুন সমাজকে গাফিল করে রাখার চেষ্টা কি জন্য ?

শয়তানের ডানা 

শয়তানের এক মহাকল্পনা হলো দাজ্জাল। আর দাজ্জালের থাকবে এক চোখ। এই একচোখা দাজ্জালকে রব হিসেবে মানতে যাতে সমস্যা না হয় তার জন্য সেলিব্রেটিরা, মিডিয়া প্রতিনিয়ত এক চোখের বিষয়টি নরমাল বানাচ্ছে এক চোখ show করে।

·         BTS এর এক চোখ প্রদর্শন।

এভাবে তারা এক চোখ প্রদর্শন করে গানের মধ্যে।

            ব্লাক ম্যাজিক চর্চা “Skull and banes” song এ ।

·         এ হাতে রয়েছে এক চোখের ট্যাটু।

·         ”MukkBang Remix” Song এ আল্লাহর মত পূজা করার কথা বলা হয়েছে। 

Ø  BTS সদস্যদের বাস্তব অবস্থা ও তাদের জীবন:

পশ্চিমা বিশ্বের অপসংস্কৃতিক আগ্রাসন, পূজিবাদী অর্থনীতি, সমাজতন্ত্র ও সেক্যুলার শিক্ষানীতি এবং পশ্চিমা দর্শনের মাধ্যমে আমাদেরকে তাদের দাস বানিয়ে রেখেছে। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে তাদের মিডিয়া।

মিডিয়াতে কোন কিছু এমনভাবে চাকচিক্যময় করে প্রচার যে তা জনসাধারণ আগ্রহের সাথে মেনে নেয় কোন প্রকার চিন্তা ভাবনা ছাড়াই। বিশেষ করে ইয়াং জেনেরেশন! মিডিয়ার প্রতি তারা এতো বেশি আসক্ত যে, যা দেখে তাই গ্রহণ করে নেয়। যদিও সেটা বাঙ্গালী জাতীর শিল্প-সংস্কৃতি বা ইসলামী মূল্যবোধ বিরোধী হয়। কোন প্রকার যাচাই-বাচাই করার চিন্তাও করে না।

২০১৭-১৯ সালে ইন্টারনেটে প্রভাবশালী ২৫ জনের মধ্যে BTS অন্তর্ভূক্ত ছিল। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানেও তাদের প্রভাব রয়েছে। আমাদের ইয়াং জেনেরেশন তাদের দেখে উৎসাহিত হয়। তাদের মত জীবন পাবার আকাঙ্খা করে। মনে করে তাদের লাইফ কতই না ভালো!  বাস্তব অবস্থা পুরাই উল্টো।

BTS হলো K-POP Industry এর একটি অংশ মাত্র। ২০১৭ সালে K-Pop Star এর একজন সদস্য  আত্মহত্যা করে। এরপর থেকে বেরিয়ে আসে অনেক অজানা সত্য। বলা হয় যে,তারা মেন্টালি সুস্থ নয়। প্রথমত, এই ইয়োথ স্টারদের K-POP Industry তে কিনে নেয়া হয় দাস হিসেবে। তাদেরকে কোনো প্রফিট দেয়া হয় না ১০-১৫ বছর পর্যন্ত।

গোলাম হওয়ায় তাদেরকে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে দেয়া হয় না। খেতেও পারে না স্বাধীনভাবে এমনকি ঘুমাতেও দেয়া হয় না। সারাদিন রাত কাজ করিয়ে মাত্র চার ঘণ্টা ঘুমাতে দেয়া হয়। তাদের কঠিন ডায়েট করানো হয়। যাতে তাদের ওজন সামান্যও না বেড়ে যায়। যদি ওজন বেড়ে যায় তবে খেতে না দিয়ে বরং পানি পান করিয়ে রাখা হয় যতক্ষণ ওজন স্বাভাবিক না হয়।

এক K-POP idol বলে, “I think I consumed about 300 calorios a day!“ ভাবুন তো মাত্র ৩০০ ক্যালরি একদিনে! যেখানে তাদের মত অধিক পরিশ্রমী টিনেজারদের প্রয়োজন দিনে প্রায় ২০০০ ক্যালরির উপরে।

তাদের বাস্তব অবস্থার কিছু পিকচার দেয়া হলো। 


এছাড়া তাদেরকে ছেলে-মেয়ে এক সাথে সাক্ষাত, কথা-বার্তা বলতে পারে না। ছেলে-ছেলে,মেয়ে-মেয়ে এক সাথে ২৪ ঘণ্টা থাকতে হয়। যারা সুন্দর নয় তাদের প্লাস্টিক সার্জারী করানো হয়।

তাদের এই Slave Contact ( গোলামী চুক্তি ) শেষ না হওয়া অবধি পরিবারের সাথেও সাক্ষাত করতে দেয়া হয় ন। কঠোর ডায়েট ও ঘুমের অভাবে বিভিন্ন প্রোগ্রামে তাদেরকে বেহুশ হয়ে পড়ে যেতে দেখা যায়।

২৪ ঘণ্টা ছেলেরা ছেলেদের সাথে আর মেয়েরা মেয়েদের সাথে থাকার এই নিয়ম সর্বপ্রথম সুলি(Sulli) নামক ২৫ বছর বয়সী একজন K-Pop Star ভঙ্গ করে  ও একটা রিলিশনে জড়িয়ে পড়ে এবং পাবলিকলি তা শেয়ার করে।

 সে এই K-POP Industry এর কঠোর নিয়মনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। পরে তাকে প্রচন্ড Cyberbulling এর শিকার হতে হয় যার জন্য সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে এবং বলে ”আমি মোটেও খারাপ মানুষ নই” এর পরের দিন সে আত্মহত্যা করে।

আরও প্রাণ গেছে  Ahn so jin ( 22 years old),  “Goo Hara found dead at home ( 24 years old)” নামক pop star. এগুলো হলো তাদের বাস্তব অবস্থা। কিন্তু এগুলো কখনোই মিডিয়াতে দেখানো হবে না।  কারণ তাহলে তাদের Banding নষ্ট হয়ে যাবে। 

 আর এটাই হলো মিডিয়ার প্রতারণা। এভাবে বাস্তবতাকে গোপন করে মিথ্যা ও অবাস্তব বিষয়কে আকর্ষণীয় করে আমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয় Social Engineering এর মাধ্যমে।

ইসলাম কী বলে ??

প্রিয় মুসলিম ভাই-বোন! এক মুসলমানের আবেগ, অনুভূতি, ভালোবাসা ও ত্যাগ সবকিছু আল্লাহর জন্য হবে। আল্লাহ নিদের্শিত ব্যক্তি বা বস্তু ব্যতীত অন্যথায় ভালোবাসা প্রকাশ করা যাবে না। আর এতে রয়েছে তার ইহকালীন সফলতা ও পরকালীন মুক্তি। আর এ সফলতা অর্জনের লক্ষ্যেই আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীতে আমাদেরকে প্রেরণ করেছেন। আপনি অবশ্যই BTS এর পরিচয় ও তাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে সম্পর্কে জেনেছেন। তারা বিভিন্নভাবে আপনার মহামূল্যবান ইমানকে ধ্বংস করে দুনিয়া ও আখেরাতকে নষ্ট করছে। একজন মুসলমান জীবনের সকল ক্ষেত্রে সকল অবস্থায় ইসলামকে অনুসরণ করতে হবে। ইসলামী জীবন ব্যবস্থার বাহিরে অন্য কোন জীবনাদর্শ বা আদর্শ গ্রহনের সুযোগ নেই।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ”আর যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন গ্রহণ করতে চাইবে কক্ষনো তার সেই দ্বীন কবূল করা হবে না এবং আখেরাতে সে ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে”। 

( সুরা আলে-ইমরান, আয়াত নং- ৮৫ )

 আসুন কিছু বিষয় জেনে নেয়ার চেষ্টা করি।

Ø  সাদৃশ্য গ্রহণ করা:

আমরা অনেক প্রিয় ভাই-বোনকে দেখতে পায় যারা তাদের মত চলার চেষ্টা করেন। তাদেরকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেন। অথচ আমাদের একমাত্র আদর্শ হলেন মহানবী মুহাম্মদ সা.। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

”অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে”। 

( সুরা আহযাব, আয়াত নং- ২১ )

রাসূল সা. বলেন, ”যে ব্যক্তি অন্য জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের দলভুক্ত গণ্য হবে”।

(আবুদাঊদ হা/৪০৩১; মিশকাত হা/৪৩৪৭)

প্রিয় বোন! আপনার আদর্শ হলেন মহানবী সা.। একবার চিন্তা করুন তো আপনার স্রষ্টা যেখানে আদর্শ হিসেবে মহানবী সা. কে নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন সেখানে অন্য কাউকে গ্রহণের সুযোগ আছে কি?! আর প্রিয় নবী সা. যিনি কিয়ামতের দিন আপনার-আমার জন্য সুপারিশ করবেন, যাকে আল্লাহ তায়ালা বিশ্ববাসীর জন্য রহমত করে পাঠিয়েছেন, যিনি চরম অবহেলিত ও নির্যাতিত নারী জাতিকে সর্বোচ্চ সম্মানের আসন দিয়েছেন, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি যার অনুসরণ করবে সে তাদের দলভূক্ত হবে।  প্রিয় বোন! আপনি যার অনুসরণ করছেন সে কি মুসলিম ? অবশ্যই না। তাহলে আপনার অবস্থা বা অবস্থান কোথায় হবে ??

একজন মুসলমান হিসেবে কোন অবস্থাতেই অমুসলিমদের সাদৃশ্য গ্রহণ করা যাবে না বরং তা হারাম। পোষাকে হোক বা চালচলনে। 

Ø  সমকামিতা:

আমরা পূর্বের আলোচনা থেকে জেনেছি যে, BTS এর অন্যতম উদ্দেশ্য হলো সমকামিতা প্রোমোট করা স্রষ্টার স্বাভাবিক রীতি হলো নারী-পুরুষের মাঝে বিবাহের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করা ইসলামে সমকামিতা কঠিন শাস্তিযোগ্য অপরাধ আমরা জানি নবি লূত আ. এর উম্মতের একটা  অংশ সমকামিতার সাথে সম্পৃক্ত ছিল ফলে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে কঠিন শাস্তির মাধ্যমে ধ্বংস করেছিলেন

আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সা. বলেন,কাউকে সমকাম করতে দেখলে তোমরা উভয় সমকামীকেই হত্যা করবে”।

(সুনান আবু দাউদ, তিরমিযী,; ইবন মাজাহ, বায়হাক্বী,হাকিম)

আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সা. বলেন, “আল্লাহ তা‘আলা এমন ব্যক্তির প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে কখনো তাকাবেন না যে সমকামে লিপ্ত হয় অথবা কোনো মহিলার মলদ্বারে গমন করে”।

(ইবন আবী শাইবাহ, তিরমিযী)

Ø  গান-বাজনা:

গান-বাজনা শয়তানের কাজ। এর মাধ্যমে শয়তান মানুষকে বিপথগামী করে রাখে। ইসলাম গান-বাজনাকে হারাম ঘোষণা করেছে। BTS  গান-বাজনার মাধ্যমে যুবসমাজকে ধ্বংস করছে। শয়তানের পথে পরিচালিত করছে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, “ আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য আসার বাক্য কিনে নেয় জ্ঞান ছাড়াই এবং আল্লাহর দেখানো পথ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে। তাদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি”।

( সুরা লুকমান, আয়াত নং- ০৬ )

রাসূলুল্লাহ সা. বলেনঃ “আমার উম্মতের কিছু লোক মদের নাম পাল্টিয়ে তা পান করবে। তাদের সামনে গায়িকারা বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র সহকারে গান করবে। আল্লাহ্ তা'আলা তাদেরকে ভূ-গর্ভে বিলীন করে দেবেন এবং কতকের আকৃতি বিকৃত করে বানর ও শূকরে পরিণত করে দেবে“।

 (বুখারী, আবু দাউদ )

ইবনে আব্বাস রা. বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ”আল্লাহ তা’আলা মদ, জুয়া, তবলা ও সারেঙ্গী হারাম করেছেন”। তিনি আরও বলেন, “নেশাগ্ৰস্ত করে এমন প্রত্যেক বস্তু হারাম”।

 ( আহমদ, আবু দাউদ )

Ø  শিরকের চর্চা:

প্রিয় বোন! পৃথিবীতে যত পাপ রয়েছে তন্মধ্যে সবচেয়ে বড় অমার্জনীয় পাপ হলো শিরকআল্লাহ তায়ালার সাথে কোনো সৃষ্টিজীবের সাদৃশ্য করা বা আল্লাহর অংশে অন্য কারো অংশীদার সাব্যস্ত করাজীবন-মরণ সবকিছু আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করতে হবেঅন্য কারো জন্য করলে তা শিরক হবে

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

”আর স্মরণ কর, যখন লুকমান তার পুত্রকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছিল, ‘প্রিয় বৎস, আল্লাহর সাথে শিরক করো না; নিশ্চয় শিরক হল বড় যুলম

( সুরা লুকমান, আয়াত নং- ১৩ )

”নিশ্চয় আল্লাহ তার সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না। এছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছে ক্ষমা করেন। আর যে-ই আল্লাহর সাথে শরীক করে, সে এক মহাপাপ রটনা করে”।

( সুরা নিসা, আয়াত নং- ৪৮ )

BTS এর গানের মধ্যে দেখা যায় যে, জীবন শয়তানের কাছে সপে দেয়ার প্রার্থনা করা হচ্ছে, ”MukkBang Remix” Song এ আল্লাহর মত পূজা করার কথা বলা হয়েছে।  যা নিঃসন্দেহে শিরক। প্রিয় মুসলিম বোন! এরপরও কি একজন মুসলমান তাদের সাপোর্ট করতে পারে ?, তাদের জন্য মায়া-মমতা প্রকাশ করতে পারে ?

 তারা গানের মাধ্যমে সরলমনা মুসলমানদের ইমান ধ্বংস করছে।

Ø  দাজ্জাল:

দাজ্জালের ফিতরা সবচেয়ে ভয়ংকর হবে। এজন্য পৃথিবীতে যত নবি-রাসূল এসেছেন সবাই স্বীয় উম্মাতকে দাজ্জালের ফিতনার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। দাজ্জাল নিজেকে রব দাবী করবে। তার একহাতে থাকবে জান্নাত আর একহাতে জাহান্নাম। যে ব্যক্তি তাকে রব হিসেবে মেনে নিবে না তাকে সে হত্যা করবে। তার একচোখ কানা থাকবে। যে তাকে রব হিসেবে স্বীকার করবে তার ইমান চলে যাবে। দাজ্জালের অনুসারে হবে ইহুদীরা। দাজ্জাল খুব সহজে নারীদেরকে তার অনুসারী করে নিবে। আমরা BTS দের দেখতে পাই যে, তারা তাদের বিভিন্ন সময় একচোখ প্রদর্শন করছে। যা শয়তানের মহাপরিকল্পনার অংশ।

একচোখ কানা উভয় চোখের মাঝে কাফের লেখা থাকবে :

 আনাস ইবনু মালিক রা. সূত্রে নবী সা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ্ এমন কোন নবী পাঠাননি যিনি তাঁর জাতিকে কানা মিথ্যুকটির ব্যাপারে সতর্ক করেননি। সে কানা (দাজ্জাল)। আর তোমাদের প্রতিপালক কানা নন। তার দু’চোখের মাঝখানে ’কাফির’ লেখা থাকবে।

( সহীহ বুখারী )

কারা দাজ্জালের অনুসরণ করবে?

দাজ্জালের অধিকাংশ অনুসারী হবে ইহুদী, তুর্কী এবং অনারব লোক। তাদের অধিকাংশই হবে গ্রাম্য মূর্খ এবং মহিলা। ইহুদীরা মিথ্যুক কানা দাজ্জালের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী দাজ্জাল হবে তাদের বাদশা। তার নেতৃত্বে তারা বিশ্ব পরিচালনা করবে।

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ দাজ্জালের অধিকাংশ অনুসারী হবে ইহুদী এবং মহিলা।

( মুসনাদে ইমাম আহমাদ )

 তিনি আরো বলেনঃ “ইস্পাহানের সত্তর হাজার ইহুদী দাজ্জালের অনুসরণ করবে। তাদের সবার পরনে থাকবে সেলাই বিহীন চাদরমুমিন।

মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান। 

গ্রাম্য অশিক্ষিত লোকেরা মূর্খতার কারণে এবং দাজ্জালের পরিচয় সম্পর্কে তাদের জ্ঞান না থাকার কারণে দাজ্জালের অলৌকিক ক্ষমতা দেখে তারা ফিতনায় পড়বে। মহিলাদের ব্যাপারটিও অনুরূপ। তারা সহজেই যে কোন জিনিষ দেখে প্রভাবিত হয়ে থাকে।

Ø  টার্গেট যুবসমাজ:

এক মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু এরা মধ্যে সবচেয়ে মূল্যবান সময় হলো ‍যুবক বয়স। এটাকে জীবনের Golden age বলে। ইসলামে যুবক বয়সের গুরুত্ব অত্যাধিক। কিয়ামতের দিন যৌবনকাল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। যুববয়সের ইবাদতকে আল্লাহ তায়ালা খুব পছন্দ করেন। কিয়ামতের দিন যুববয়সে ইবাদতকারীদের বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত করা হবে।

যৌবনকাল সম্পর্কে হাদিসে বলা হয়েছে-

মহানবী সা. বলেছেন, আল্লাহ সাত শ্রেণির মানুষকে হাশরের দিন তার আরশের ছায়ায় স্থান দেবেন। যে দিন তার ছায়া ছাড়া অন্য কোনো ছায়া থাকবে না।

তারা হলেন:  ওই যুবক, যে নিজের যৌবনকে আল্লাহর ইবাদতে অতিবাহিত করেছে .........

( বুখারী-মুসলিম )

এজন্য শয়তানের একটা গুরুত্ব মিশন হলো এই যুবকদেরকে বিভিন্নভাবে আল্লাহর ইবাদত থেকে গাফেল করে রাখা ও বিপথগামী করা। আর শয়তানের এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে BTS সহ অন্যান্য Music & Film Industry কাজ করছে।

Ø  কেনো এতো সতর্কতা:

প্রিয়  ‍মুসলিম ভাই ও বোনেরা! প্রযুক্তির কল্যাণে সারা পৃথিবী আমাদের হাতের  ‍মুঠোয় চলে এসেছে। পৃথিবী প্রান্তে কোথায় কি হচ্ছে তা খুব সহজেই জানা যাচ্ছে। প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষের চিন্তা-চেতনাতেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। প্রযুক্তি ততদিন আমাদের জন্য কল্যাণকর হবে যতদিন আমরা এটাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারবো। BTS বর্তমান নেটদুনিয়ার ভাইরাল নাম। এদেশীয় যুবক-যুবতী, কিশোর-কিশোরীদের বড় অংশ এতোমধ্যে তাদের ফ্যান হয়ে গেছে। তারা তাদের সর্বোচ্চ ভালোবাসা BTS এর জন্য বিলিয়ে দিচ্ছে। সাথে তাদের মহামূল্যবান ইমানও ধ্বংস করে দিচ্ছে।

পৃথিবীতে ইমানের বন্ধনে আবদ্ধ মুসলমানগণ একে অপরের জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেছে তা বিরল। জীবনের সবকিছুর মাধ্যমে অপর মুসলমানের পাশে দাড়িয়েছে। আর এই ভালোবাসা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। তাই এদের জন্য মহান আল্লাহ মহা পুরস্কারের ঘোষণা করেছেন। একজন মুসলিমের কাছে সবচেয়ে আপনজন হলেন তার অপর ইমারদার মুসলমান। তাহলে আপনজনের বিপদ বা ধ্বংস দেখে কি কেউ নিরব থাকতে পারে ???

অবশ্যই সে নিরব থাকতে পারে না। সে তার সর্বোচ্চ দিয়ে আপনজনের পাশে দাড়াবে। একজন মুসলিম ছেলে বা মেয়ে হোক BTS এর ফ্যান হওয়ার মাধ্যমে জীনের সবচেয়ে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। আল্লাহর শাস্তির দিকে ধাবিত হচ্ছে।

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন! আপনাকেই বলছি, ধ্বংসাত্বক পথ থেকে ফিরে আসুন। আল্লাহর কাছে ফিরে আসুন তিনি আপনাকে অনেক ভালোবাসেন, অসীম দয়ালু। তার কাছে নিজের ভুল স্বীকার করুন। নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখুন। ইসলামী অনুশাসন মেনে চলুন। দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। আল্লাহ তায়াল আমাদেরকে সঠিকবুঝদান করুন।

আমিন


Presented by:

Shahariar Hossain

Dept: of  ITC

Islamic University

Kushtia, Bangladesh.

In collaboration and editing

H.M.Huzzatullah

Dept: of AHIS

Islamic University

Kushtia, Bangladesh.


No comments

Powered by Blogger.