বিষয় ভিত্তিক কুরআনের আয়াত – রাসূল সা. এর অনুসরণ আবশ্যক



বিষয়ভিত্তিক কুরআনের আয়াত

                                     রাসূল সা. এর অনুসরণ আবশ্যক

আল্লাহ তায়ালা মানব জাতির হেদায়েতের জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবি-রাসূল প্রেরণ করেছেন।  নবি-রাসূলগণের নিকট প্রেরিত সংবাদ বা বাণীকে ওহি বলে।  ওহি দু’প্রকার । যথা ওহি মাতলু বা কুরআন এবং ওহি গাইর-মাতলু বা হাদিস।  কুরআনে আল্লাহ তায়ালা শরিয়তের বিধানকে সংক্ষিপ্ত ভাবে বর্ণনা করেছেন। আর হাদিসে সেটা বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।  তাই একজন মুমিন হতে হলে অবশ্যই কুরআন ও হাদিসকে পরিপূর্ণভাবে মেনে চলতে হবে।

ওলামাগণ এব্যাপারে একমত যে, প্রত্যেক মুসলিমের জন্য রাসুল সা. এর অনুসরণ করা ফরজ।  অন্যথায়, তার কোন ইবাদত আল্লাহর নিকট গৃহিত হবে না।  নিম্নে রাসূল সা. এর অনুসরণ বিষয়ক কুরআনের আয়াত উল্লেখ করা হলো।

প্রথম আয়াত

وَ مَا کَانَ لِمُؤۡمِنٍ وَّ لَا مُؤۡمِنَۃٍ اِذَا قَضَی اللّٰهُ وَ رَسُوۡلُهٗۤ اَمۡرًا اَنۡ یَّکُوۡنَ لَهُمُ الۡخِیَرَۃُ مِنۡ اَمۡرِهِمۡ ؕ وَ مَنۡ یَّعۡصِ اللّٰهَ وَ رَسُوۡلَهٗ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلٰلًا مُّبِیۡنًا

আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন নির্দেশ দিলে কোন মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য নিজদের ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার করার অধিকার থাকে না; আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করল সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে।

সুরা আল-আহযাব, আয়াত- ৩৬

দ্বিতীয় আয়াত

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تُقَدِّمُوۡا بَیۡنَ یَدَیِ اللّٰهِ وَ رَسُوۡلِهٖ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ

হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সামনে তোমরা কোন বিষয়ে অগ্রণী হয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।

সুরা আল-হুজরাত, আয়াত ০১

তৃতীয় আয়াত

قُلۡ اَطِیۡعُوا اللّٰهَ وَ الرَّسُوۡلَ ۚ فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَاِنَّ اللّٰهَ لَا یُحِبُّ الۡکٰفِرِیۡنَ

বল, ‘তোমরা আল্লাহ ও রসূলের অনুগত হও।’ কিন্তু যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রাখ নিশ্চয়ই আল্লাহ অবিশ্বাসীদেরকে ভালবাসেন না।

সুরা আলে-ইমরান, আয়াত ৩২

চতুর্থ আয়াত

 مَنۡ یُّطِعِ الرَّسُوۡلَ فَقَدۡ اَطَاعَ اللّٰهَ ۚ وَ مَنۡ تَوَلّٰی فَمَاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ عَلَیۡهِمۡ حَفِیۡظًا 

কেউ রাসূলের আনুগত্য করলে সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল আর কেউ মুখ ফিরিয়ে নিলে আপনাকে তো আমরা তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক করে পাঠাই নি।

সুরা আন-নিসা, আয়াত ৮০

পঞ্চম আয়াত

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّـهَ وَأَطِيعُوا الرَّ‌سُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ‌ مِنكُمْ ۖ فَإِن تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُ‌دُّوهُ إِلَى اللَّـهِ وَالرَّ‌سُولِ إِن كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّـهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ‌ ۚ ذَٰلِكَ خَيْرٌ‌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا
হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর অনুগত হও এবং রসূলের অনুগত হও এবং তোমাদের মধ্যকার কর্তৃস্থানীয় ব্যক্তিগণের; যদি কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটে, তাহলে সেই বিষয়কে আল্লাহ এবং রসূলের (নির্দেশের) দিকে ফিরিয়ে দাও যদি তোমরা আল্লাহ এবং আখিরাত দিবসের প্রতি ঈমান এনে থাক; এটাই উত্তম এবং সুন্দরতম মর্মকথা। 

সুরা নিসা, আয়াত – ৫৯

ষষ্ঠ আয়াত

وَأَطِيعُوا اللَّـهَ وَرَ‌سُولَهُ وَلَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِ‌يحُكُمْ ۖ وَاصْبِرُ‌وا ۚ إِنَّ اللَّـهَ مَعَ الصَّابِرِ‌ينَ.
তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুগত হও। তোমরা সাহস ও ক্ষমতাহারা হয়ে যাবে যদি নিজেদের মধ্যে বিবাদ কর। তোমরা ধৈর্য ধারণ কর। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।

সুরা আল-আনফাল, আয়াত ৪৬

সপ্তম আয়াত

وَأَطِيعُوا اللَّـهَ وَأَطِيعُوا الرَّ‌سُولَ وَاحْذَرُ‌وا ۚ فَإِن تَوَلَّيْتُمْ فَاعْلَمُوا أَنَّمَا عَلَىٰ رَ‌سُولِنَا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ

আর তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর। আর সাবধানতা অবলম্বন কর; তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তবে জেনে রাখ যে, আমাদের রাসূলের দায়িত্ব তো কেবল সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।

সুরা মায়েদা, আয়াত ৯২

অষ্টম আয়াত

لَّا تَجْعَلُوا دُعَاءَ الرَّ‌سُولِ بَيْنَكُمْ كَدُعَاءِ بَعْضِكُم بَعْضًا ۚ قَدْ يَعْلَمُ اللَّـهُ الَّذِينَ يَتَسَلَّلُونَ مِنكُمْ لِوَاذًا ۚ فَلْيَحْذَرِ‌ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِ‌هِ أَن تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
 রসূলের আহবানকে তোমরা তোমাদের একে অপরের প্রতি আহবানের মত গণ্য করো না; তোমাদের মধ্যে যারা চুপি চুপি সরে পড়ে, আল্লাহ তাদের জানেন। সুতরাং যারা তার আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় অথবা কঠিন শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে।

সুরা আন-নুর, আয়াত ৬৩

নবম আয়াত

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّـهِ وَلِلرَّ‌سُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ ۖ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّـهَ يَحُولُ بَيْنَ الْمَرْ‌ءِ وَقَلْبِهِ وَأَنَّهُ إِلَيْهِ تُحْشَرُ‌ونَ
হে ঈমানদারগণ রাসূল যখন তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে ডাকে যা তোমাদেরকে প্রাণবন্ত করে তখন তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের ডাকে সাড়া দেবে এবং জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ মানুষ ও তার হৃদয়ের মাঝে অন্তরায় হন। আর নিশ্চয় তারই দিকে তোমাদেরকে একত্রিত করা হবে।

সুরা আনফাল, আয়াত ২৪

দশম আয়াত

وَمَن يُطِعِ اللَّـهَ وَرَ‌سُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِ‌ي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ‌ خَالِدِينَ فِيهَا ۚ وَذَٰلِكَ

الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
 কেউ আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করলে আল্লাহ তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; তারা সেখানে স্থায়ী হবে আর এটাই হলো মহাসাফল্য।

সুরা আন-নিসা, আয়াত ১৩

একাদশ আয়াত

وَمَن يَعْصِ اللَّـهَ وَرَ‌سُولَهُ وَيَتَعَدَّ حُدُودَهُ يُدْخِلْهُ نَارً‌ا خَالِدًا فِيهَا وَلَهُ عَذَابٌ مُّهِين

আর কেউ আল্লাহ ও তার রাসূলের অবাধ্য হলে এবং তার নির্ধারিত সীমা লংঘন করলে তিনি তাকে আগুনে নিক্ষেপ করবেন; সেখানে সে স্থায়ী হবে এবং তার জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি রয়েছে।

সুরা আন-নিসা, আয়াত ১৪

দ্বাদশ আয়াত

أَلَمْ تَرَ‌ إِلَى الَّذِينَ يَزْعُمُونَ أَنَّهُمْ آمَنُوا بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنزِلَ مِن قَبْلِكَ يُرِ‌يدُونَ أَن يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ وَقَدْ أُمِرُ‌وا أَن يَكْفُرُ‌وا بِهِ وَيُرِ‌يدُ الشَّيْطَانُ أَن يُضِلَّهُمْ ضَلَالًا بَعِيدًا. وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ تَعَالَوْا إِلَىٰ مَا أَنزَلَ اللَّـهُ وَإِلَى الرَّ‌سُولِ رَ‌أَيْتَ الْمُنَافِقِينَ يَصُدُّونَ عَنكَ صُدُودًا.

তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা ধারণা (ও দাবী) করে যে, তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে এবং তোমার পূর্বে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে, তাতে তারা বিশ্বাস করে? অথচ তারা তাগূতের কাছে বিচারপ্রার্থী হতে চায়; যদিও তা প্রত্যাখ্যান করার জন্য তাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর শয়তান তাদেরকে ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট করতে চায়। তাদেরকে যখন বলা হয়, ‘আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তার দিকে এবং রসূলের দিকে এস।’ তখন তুমি মুনাফিক (কপট)দেরকে তোমার নিকট থেকে মুখ একেবারে ফিরিয়ে নিতে দেখবে।

সুরা আন-নিসা, আয়াত ৬০-৬১

ত্রয়োদশ আয়াত

إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِينَ إِذَا دُعُوا إِلَى اللَّـهِ وَرَ‌سُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَن يَقُولُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا ۚ وَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ. وَمَن يُطِعِ اللَّـهَ وَرَ‌سُولَهُ وَيَخْشَ اللَّـهَ وَيَتَّقْهِ فَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ.

মুমিনদেরকে যখন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি এ মর্মে আহবান করা হয় যে, তিনি তাদের মধ্যে বিচার, মীমাংসা করবেন, তাদের কথা তো এই হয় যে, তখন তারা বলে: ‘আমরা শুনলাম ও আনুগত্য করলাম।’ আর তারাই সফলকাম।  আর যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর তাকওয়া অবলম্বন করে, তারাই কৃতকার্য।

সুরা আন-নুর, আয়াত – ৫১-৫২

চতুর্দশ আয়াত

وَمَا آتَاكُمُ الرَّ‌سُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا ۚ وَاتَّقُوا اللَّـهَ ۖ إِنَّ اللَّـهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ  
রাসূল তোমাদের যা দেয় তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও এবং আল্লাহকেই ভয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি প্রদানে কঠোর।

সুরা হাশর, আয়াত

পঞ্চদশ আয়াত

لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَ‌سُولِ اللَّـهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْ‌جُو اللَّـهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ‌ وَذَكَرَ‌ اللَّـهَ كَثِيرً‌ا.

অবশ্যই তোমাদের জন্য রয়েছে রাসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম আদর্শ, তার জন্য যে আশা রাখে আল্লাহ ও শেষ দিনের এবং আল্লাহকে বেশী স্মরণ করে।

সুরা আহযাব, আয়াত ২১

ষষ্ঠদশ আয়াত

وَالنَّجْمِ إِذَا هَوَىٰ. مَا ضَلَّ صَاحِبُكُمْ وَمَا غَوَىٰ. وَمَا يَنطِقُ عَنِ الْهَوَىٰ. إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَىٰ.

শপথ নক্ষত্রের, যখন তা অস্তমিত হয়। তোমাদের সঙ্গী বিভ্রান্ত নয়, বিপথগামীও নয়। এবং সে মনগড়া কথাও বলে না। তা তো অহী, যা তার প্রতি প্রত্যাদেশ হয়।

সুরা আন-নাজম, আয়াত ১-৪

সপ্তদশ আয়াত

وَأَنزَلْنَا إِلَيْكَ الذِّكْرَ‌ لِتُبَيِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ إِلَيْهِمْ وَلَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُ‌ونَ

আর আপনার প্রতি আমরা কুরআন নাযিল করেছি, যাতে আপনি মানুষকে যা তাদের প্রতি নাযিল করা হয়েছে, তা স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেন এবং যাতে তারা চিন্তা করে।

সুরা আন-নাহল, আয়াত ৪৪

 

No comments

Powered by Blogger.