ইসলামী সংক্ষীপ্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব-০৩

ইসলামকে জানুন 


১. প্রশ্ন: যদি তোমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, তোমার রবকে কিভাবে চিনতে পেরেছ?

উত্তর: তাহলে তুমি বল, তার সম্পর্কে ইলম, তার অস্তিত্ব সম্পর্কে স্বভাবজাত স্বীকৃতি, তার সম্মান ও ভীতি আর ক্ষমতা যা দিয়ে তিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন সে সবের আলোকেই আমি তাকে চিনেছি। যেমনি ভাবে আমি তাকে চিনেছি তার নিদর্শনসমূহ ও সৃষ্টিগুলোর প্রতি দৃষ্টি দিয়ে ও চিন্তা-গবেষণা করে।

যেমন,

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمِنۡ ءَايَٰتِهِ ٱلَّيۡلُ وَٱلنَّهَارُ وَٱلشَّمۡسُ وَٱلۡقَمَرُۚ لَا تَسۡجُدُواْ لِلشَّمۡسِ وَلَا لِلۡقَمَرِ وَٱسۡجُدُواْۤ لِلَّهِۤ ٱلَّذِي خَلَقَهُنَّ إِن كُنتُمۡ إِيَّاهُ تَعۡبُدُونَ

 আর তার নিদর্শনগুলোর মধ্যে রয়েছে রাত, দিন, সূর্য চন্দ্র.

 সূরা ফুসসিলাত, আয়াত: ৩৭

এই সু-শৃঙ্খল, সুক্ষ্ম সুন্দর বিশাল সৃষ্ট-জগত নিজে নিজে কখনো সৃষ্ট হতে পারে না। অবশ্যই অস্তিত্বহীনতা থেকে অস্তিত্বে আনয়ন করার জন্য তার স্রষ্টা রয়েছে। এটিই শক্তিশালী, মহান প্রজ্ঞাময় স্রষ্টার অস্তিত্বের বড় প্রমাণ। প্রত্যেক মাখলুক তাদের স্রষ্টা, মালিক, রিযিক দাতা তাদের বিষয়াদির ব্যবস্থাপককে স্বীকার করে। তবে মুষ্টিমেয় কতক নাস্তিক ব্যতীত। তার মাখলুকের মধ্যে আরো রয়েছে সাত আসমান, সাত যমীন তার অন্তর্ভুক্ত মাখলুকসমূহ, যার সংখ্যা, হাকীকত অবস্থা সম্পর্কে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ জানে না এবং তাদের রক্ষণাবেক্ষণ রিযিকের ব্যবস্থা মহান স্রষ্টা, চিরঞ্জীব সবকিছুর ধারক আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ করে না। আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّ رَبَّكُمُ ٱللَّهُ ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٖ ثُمَّ ٱسۡتَوَىٰ عَلَى ٱلۡعَرۡشِۖ يُغۡشِي ٱلَّيۡلَ ٱلنَّهَارَ يَطۡلُبُهُۥ حَثِيثٗا وَٱلشَّمۡسَ وَٱلۡقَمَرَ وَٱلنُّجُومَ مُسَخَّرَٰتِۢ بِأَمۡرِهِۦٓۗ أَلَا لَهُ ٱلۡخَلۡقُ وَٱلۡأَمۡرُۗ تَبَارَكَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلۡعَٰلَمِينَ

নিশ্চয় তোমাদের রব হলেন আল্লাহ, যিনি ছয় দিনে আসমানসমূহ যমীন সৃষ্টি করেছেন অতঃপর আরশে আরোহণ করেছেন। তিনি দিনকে রাত দ্বারা ঢেকে দেন, ফলে ওদের একে অন্যকে অতি দ্রুত অন্বেষণ করে। আর সূর্য, চাঁদ তারকারাজিকে তাঁর নির্দেশের অধীন করেছেন। জেনে রাখ, সৃষ্টি নির্দেশ তাঁরই। মহা বিশ্বের রব বরকতময় আল্লাহ।

সূরা আরাফ, আয়াত: ৫৪


২. প্রশ্ন: যখন তোমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, তোমার দীন কি?

উত্তর: তখন বল, আমার দীন ইসলাম। আর ইসলাম হচ্ছে তাওহীদের সাথে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করা, আনুগত্যের সাথে তার বশ্যতা মেনে নেওয়া এবং শির্ক ও মুশরিকদের থেকে মুক্ত হওয়া।

যেমন— আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

إِنَّ ٱلدِّينَ عِندَ ٱللَّهِ ٱلۡإِسۡلَٰمُ

নিশ্চয় আল্লাহর নিকট দীন হচ্ছে ইসলাম।

সূরা আল-ইমরান, আয়াত: ১৯

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেছেন: “আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দীন চায় তার কাছ থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” [সূরা আল-ইমরান, আয়াত: ৮৫] আল্লাহ কোনো দীন গ্রহণ করবেন না একমাত্র তার দীন ব্যতীত, যা দিয়ে তিনি আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রেরণ করেছেন। কারণ, তাঁর দ্বীন পূর্বের সকল শরীয়তকে রহিতকারী। অতএব ইসলাম ব্যতীত যে অন্য দীন অন্বেষণ করবে সে হিদায়াত থেকে বিচ্যুত এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে ও জাহান্নামে প্রবেশ করবে। জাহান্নাম খুব নিকৃষ্ট ঠিকানা।

 

৩. প্রশ্ন: যখন তোমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, ঈমানের রুকনগুলো কী কী?

উত্তর: তুমি বল, ঈমানের রুকন ছয়টি। আর তা হচ্ছে, তুমি ঈমান আনবে আল্লাহর প্রতি, তার ফিরিশতা, কিতাবসমূহ, রাসূলগণ ও পরকাল দিবসের প্রতি। তুমি আরো ঈমান আনবে, ভালো ও মন্দ—সবকিছুর তাকদীরের প্রতি।

আল্লাহর কিতাব ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত যেভাবে প্রমাণ করে সেভাবে এসকল রুকনসমূহের ওপর ঈমান আনা ছাড়া কারো ঈমান পূর্ণ হবে না। আর যে কেউ এর একটি অস্বীকার করবে, সে ঈমানের গণ্ডি থেকে বের হয়ে যাবে।

এর ওপর প্রমাণ হলো,

আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

لَّيۡسَ ٱلۡبِرَّ أَن تُوَلُّواْ وُجُوهَكُمۡ قِبَلَ ٱلۡمَشۡرِقِ وَٱلۡمَغۡرِبِ وَلَٰكِنَّ ٱلۡبِرَّ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةِ وَٱلۡكِتَٰبِ وَٱلنَّبِيِّ‍ۧنَ وَءَاتَى ٱلۡمَالَ عَلَىٰ حُبِّهِۦ ذَوِي ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡيَتَٰمَىٰ وَٱلۡمَسَٰكِينَ وَٱبۡنَ ٱلسَّبِيلِ وَٱلسَّآئِلِينَ وَفِي ٱلرِّقَابِ وَأَقَامَ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَى ٱلزَّكَوٰةَ وَٱلۡمُوفُونَ بِعَهۡدِهِمۡ إِذَا عَٰهَدُواْۖ وَٱلصَّٰبِرِينَ فِي ٱلۡبَأۡسَآءِ وَٱلضَّرَّآءِ وَحِينَ ٱلۡبَأۡسِۗ أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ صَدَقُواْۖ وَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُتَّقُونَ

ভালো কাজ এটা নয় যে, তোমরা তোমাদের চেহারা পূর্ব ও পশ্চিম দিকে ফিরাবে; বরং ভালো কাজ হল যে ঈমান আনে আল্লাহ, শেষ দিবস, ফিরিশতাগণ, কিতাব ও নবীগণের প্রতি এবং যে সম্পদ প্রদান করে তার প্রতি আসক্তি সত্ত্বেও নিকটাত্মীয়গণকে, ইয়াতীম, অসহায়, মুসাফির ও প্রার্থনাকারীকে এবং বন্দি মুক্তিতে এবং যে সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং যারা অঙ্গীকার করে তা পূর্ণ করে, যারা ধৈর্যধারণ করে কষ্ট ও দুর্দশায় ও যুদ্ধের সময়ে। তাঁরাই সত্যবাদী ও মুত্তাকী।

 সূরা বাকারা, আয়াত: ১৭৭

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যখন ঈমান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো, তখন তিনি বলেছেন, “তুমি ঈমান আনবে আল্লাহ, ফিরিশতা, কিতাবসমূহ, রাসূলগণ, পরকাল দিবস ও ভালো-মন্দের তাকদীরের প্রতি।

এটি বর্ণনা করেছেন সহীহ মুসলিম

 

 ৪. প্রশ্ন: যদি তোমাকে বলা হয়, কবরের আযাব ও তার শান্তি কি কুরআন ও সুন্নাহে প্রমাণিত?

উত্তর: বল, হ্যাঁ, আল্লাহ তা`আলা ফির`আউন সম্প্রদায় সম্পর্কে বলেছেন:

ٱلنَّارُ يُعۡرَضُونَ عَلَيۡهَا غُدُوّٗا وَعَشِيّٗاۚ وَيَوۡمَ تَقُومُ ٱلسَّاعَةُ أَدۡخِلُوٓاْ ءَالَ فِرۡعَوۡنَ أَشَدَّ ٱلۡعَذَابِ

সকাল-সন্ধ্যায় তাদেরকে আগুনের কাছে উপস্থিত করা হয়। আর যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে (সেদিন ঘোষণা করা হবে), ফিরআউনের অনুসারীদেরকে কঠোরতম আযাবে প্রবেশ করাও।

সূরা গাফির, আয়াত: ৪৬

অপর আয়াতে বলেন,

وَلَوۡ تَرَىٰٓ إِذۡ يَتَوَفَّى ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ يَضۡرِبُونَ وُجُوهَهُمۡ وَأَدۡبَٰرَهُمۡ وَذُوقُواْ عَذَابَ ٱلۡحَرِيقِ

আর যদি তুমি দেখতে, যখন ফিরিশতারা কাফিরদের প্রাণ হরণ করছিল, তাদের চেহারায় ও পশ্চাতে আঘাত করছিল, আর (বলছিল) ‘তোমরা জ্বলন্ত আগুনের আযাব আস্বাদন কর।

সূরা আনফাল, আয়াত: ৫০

يُثَبِّتُ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِٱلۡقَوۡلِ ٱلثَّابِتِ فِي ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا وَفِي ٱلۡأٓخِرَةِۖ

অপর আয়াতে আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ ঈমানদারদেরকে দুনিয়াতে ও আখিরাতে সুদৃঢ় বাণীর ওপর অবিচল রাখেন।

সূরা ইবরাহীম, আয়াত: ২৭

আর বারা‘ ইবন আযিব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে একটি দীর্ঘ কুদসী হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, তাতে বলা হয়, “অতঃপর আসমান থেকে একজন ঘোষক ঘোষণা দিবে, আমার বান্দা সত্য বলেছে। অতএব তাকে জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও এবং তার জন্য একটি দরজা জান্নাতের দিকে খুলে দাও। ফলে তার নিকট জান্নাতের সুবাতাস ও সুঘ্রাণ আসতে থাকবে এবং তার কবরকে তার জন্য চোখের দৃষ্টি পর্যন্ত প্রশস্ত করা হবে।” আর কাফিরের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে বলেন, “অতঃপর তার রূহকে তার শরীরে ফেরত দেওয়া হবে এবং তার নিকট দু’জন ফিরিশতা আসবে এবং তাকে বসাবে। অতঃপর তাকে প্রশ্ন করবে, তোমার রব কে? ফলে সে বলবে, হাহা হাহা আমি জানি না। অতঃপর তারা তাকে বলবেন, তোমার দীন কি? সে বলেব, হাহা হাহা আমি জানি না। অতঃপর তারা তাকে বলবেন, এই যে লোকটিকে তোমাদের মধ্যে প্রেরণ করা হয়েছিল তিনি কে? সে বলবে, হাহা হাহা আমি জানি না। অতঃপর আসমান থেকে এক ঘোষক ঘোষণা দেবে যে, সে মিথ্যা বলেছে। অতএব তার জন্য জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জাহান্নামের পোশাক পরিয়ে দাও এবং তার জন্য জাহান্নামের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। ফলে জাহান্নামের গরম বাতাস ও বিষ-বাষ্প তার কাছে আসতে থাকবে এবং তার কবরকে তার ওপর এত সংকীর্ণ করা হয় যে, তার এক পাশের হাঁড় অপর পাশের হাঁড়ে প্রবেশ করবে”। অপর বর্ণনায় বৃদ্ধি করা সহ এভাবে আছে যে, “অতঃপর তার জন্য নিযুক্ত করা হয় অন্ধ ও বধির ফিরিশতাকে। তার সাথে থাকবে লোহার হাতুড়ি, যদি তা দ্বারা পাহাড়কে আঘাত করা হয়, তবে সেটিও মাটিতে পরিণত হয়ে যাবে। আর সে তা দিয়ে তাকে এমন একটি আঘাত করবে, যা জিন ও মানুষ ব্যতীত পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যকার সবাই শুনতে পায়। আবু দাউদ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এ জন্যই প্রত্যেক সালাতে আমাদেরকে কবরের আযাব থেকে আশ্রয় চাইতে আদেশ করা হয়েছে।

 

৫. প্রশ্ন: যখন তোমাকে বলা হয়, আখিরাতে মুমিনরা কি তাদের রবকে দেখবে ?

উত্তর: বল, হ্যাঁ, তারা আখিরাতে তাদের রবকে দেখবে। তার স্বপক্ষে দলীল হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

وُجُوهٞ يَوۡمَئِذٖ نَّاضِرَةٌ ٢٢ إِلَىٰ رَبِّهَا نَاظِرَةٞ

সেদিন কতক মুখমণ্ডল হবে হাস্যোজ্জল। তারা তাদের রবের দিকে তাকিয়ে থাকবে।

 সূরা আল-কিয়ামাহ, আয়াত: ২২-২৩

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমরা অবশ্যই তোমাদের রবকে দেখবে”। হাদীসটি সহীহ বুখারী ও মুসলিম বর্ণনা করেছেন। মুমিনগণ তাদের মহান রবকে দেখার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে মুতাওয়াতির সূত্রে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। সাহাবীগণ এবং উত্তমভাবে তাদের অনুসারীরা এ ব্যাপারে ঐক্যমত্য পোষণ করেছেন। অতএব যে আল্লাহর দিদার অস্বীকার করল সে আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরোধিতা করল এবং সাহাবীগণ ও উত্তমভাবে তাদের অনুসারী মুমিনদের পথের বিরুদ্ধাচরণ করল। তবে দুনিয়াতে দেখা সম্ভবপর নয়। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমরা তোমাদের রবকে মৃত্যুর পূর্বে দেখতে পাবে না”। অধিকন্তু আল্লাহর নবী মুসা আলাইহিস সালাম যখন দুনিয়াতে আল্লাহকে দেখার আবেদন করেছিলেন, তখন তিনি বলেছেন, তুমি আমাকে দেখতে পারবে না।

যেমন- তার বাণীতে এসেছে—

وَلَمَّا جَآءَ مُوسَىٰ لِمِيقَٰتِنَا وَكَلَّمَهُۥ رَبُّهُۥ قَالَ رَبِّ أَرِنِيٓ أَنظُرۡ إِلَيۡكَۚ قَالَ لَن تَرَىٰنِي

আর যখন আমার নির্ধারিত সময়ে মূসা এসে গেল এবং তার রব তার সাথে কথা বললেন। সে বলল, হে আমার রব, আপনি আমাকে দেখা দিন, আমি আপনাকে দেখব। তিনি বললেন, তুমি আমাকে কখনো দেখবে না।

 সূরা আরাফ, আয়াত: ১৪৩


৫. প্রশ্ন: যখন তোমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, মানুষ কি সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর ইচ্ছায় চালিত না ইচ্ছাধীন ?

উত্তর: বল, মানুষ কি সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর ইচ্ছায় চালিত না কি সম্পূর্ণরূপে নিজের ইচ্ছাধীন, -এক বাক্যে কোন কথাই প্রযোজ্য হবে না। তাই উভয় কথাই ভুল। কিতাব ও সুন্নাত প্রমাণ করে যে, মানুষের ইচ্ছা ও চাওয়া উভয়টি রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সে কর্ম সম্পাদনকারী। তবে কোনোটিই আল্লাহর ইলম, ইচ্ছা ও চাওয়ার বাইরে নয়।

এটি স্পষ্ট করছে আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

لِمَن شَآءَ مِنكُمۡ أَن يَسۡتَقِيمَ ٢٨ وَمَا تَشَآءُونَ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلۡعَٰلَمِينَ

তোমাদের যে কেউ সরল পথে চলতে চায়। আর তোমরা ইচ্ছা করতে পার না, যদি না সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ ইচ্ছা করেন।

সূরা তাকবীর, আয়াত: ২৮-২৯

অন্যত্র বলেন,

وَمَا يَذۡكُرُونَ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُۚ هُوَ أَهۡلُ ٱلتَّقۡوَىٰ وَأَهۡلُ ٱلۡمَغۡفِرَةِ

অতএব যার ইচ্ছা সে তা থেকে উপদেশ গ্রহণ করুক। আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কেউ উপদেশ গ্রহণ করতে পারে না। তিনিই ভয়ের যোগ্য এবং ক্ষমার অধিকারী।

আল-মুদ্দাসসির, আয়াত: ৫৫-৫৬


৬. প্রশ্ন: যখন তোমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, আমল ব্যতীত ঈমান কি বিশুদ্ধ হয় ?

উত্তর: বল, আমল ব্যতীত ঈমান শুদ্ধ হয় না। বরং আমল অবশ্যই জরুরী। কারণ, আমল ঈমানের একটি রুকন। যেমন- মুখের স্বীকৃতি তার অন্য একটি রুকন। এর ওপর ইমামগণ একমত হয়েছেন যে, ঈমান হচ্ছে মুখে স্বীকার ও আমল করার সমষ্টি।

তার দলীল আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

وَمَن يَأۡتِهِۦ مُؤۡمِنٗا قَدۡ عَمِلَ ٱلصَّٰلِحَٰتِ فَأُوْلَٰٓئِكَ لَهُمُ ٱلدَّرَجَٰتُ ٱلۡعُلَىٰ

আর যারা তার নিকট আসবে মুমিন অবস্থায়, সৎকর্ম করে তাদের জন্যই রয়েছে সুউচ্চ মর্যাদা।

সূরা ত্বাহা, আয়াত: ৭৫

এখানে আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতে যাওয়ার জন্য ঈমান ও আমল উভয়টিকে শর্ত করেছেন।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সঠিক জ্ঞান দান করুন। 

আমিন. 

 

 

 

 

 

 

No comments

Powered by Blogger.