গুরুত্বপূর্ণ হাদিস সংকলন
”গুরুত্বপূর্ণ হাদিস সংকলন”
১.
মাজলুমের বদদোয়া থেকে বেচে থাকা।
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ مُعَاذًا
إِلَى الْيَمَنِ فَقَالَ اتَّقِ دَعْوَةَ الْمَظْلُومِ فَإِنَّهَا لَيْسَ
بَيْنَهَا وَبَيْنَ اللهِ حِجَابٌ
ইবনু ’আব্বাস রা. হতে বর্ণিত। নবী সা. যখন মু’আয রা.-কে ইয়ামানে পাঠান এবং তাকে বলেন,
মাযলুমের ফরিয়াদকে ভয় করবে। কেননা, তার ফরিয়াদ এবং আল্লাহর মাঝে কোন পর্দা থাকে না।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ৪৬ ; অত্যাচার, কিসাস ও লুণ্ঠন, অধ্যায় ৯, হাঃ ২৪৪৮; মুসলিম, পর্ব ১: ঈমান, অধ্যায় ৭, হাঃ ১৯ ৩
২. ইমানের শাখা-প্রশাখা
عَن أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ الإِيمَانُ بِضْعٌ
وَسِتُّونَ شُعْبَةً وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ
مِنَ الْإِيمَانِ
আবূ হুরায়রাহ্ রা. হতে বর্ণিত,
নবী সা. বলেছেন, ঈমানের ষাটেরও অধিক শাখা রয়েছে। আর লজ্জা হচ্ছে ঈমানের একটি শাখা।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ২: ঈমান, অধ্যায় ৩, হাঃ ৯; মুসলিম, পর্ব ১: ঈমান, অধ্যায় ১২, হাঃ ৩৫
৩. ইসলামে উত্তম কাজ
عَنْ عَبْدِ اللهِ
بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَجُلًا سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله
عليه وسلم أَيُّ الإِسْلامِ خَيْرٌ قَالَ تُطْعِمُ الطَّعَامَ وَتَقْرَأُ
السَّلَامَ عَلَى مَنْ عَرَفْتَ وَمَنْ لَمْ تَعْرِفْ
’আবদুল্লাহ্ ইবনু ’আমর রা. হতে বর্ণিত,
এক ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল সা -কে জিজ্ঞেস করল, ইসলামের কোন্ জিনিসটি উত্তম? তিনি বললেন, তুমি খাদ্য খাওয়াবে ও চেনা অচেনা সকলকে সালাম দিবে।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ২: ঈমান, অধ্যায় ৬, হাঃ ১২; মুসলিম, পৰ্ব ১: ঈমান, অধ্যায় ১৪, হাঃ ৪২
৪. সবকিছুর চেয়ে রাসূল সা. কে বেশি ভালোবাসতে হবে তবেই
মুমিন হওয়া যাবে।
عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ
إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ
আনাস রা. হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সা. বলেনঃ তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার নিকট তার পিতা, তার সন্তান ও সব মানুষের অপেক্ষা অধিক প্রিয় হই।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ২: ঈমান, অধ্যায় ৮, হাঃ ১৫; মুসলিম, পর্ব ১; ঈমান, অধ্যায় ১৬, হাঃ ৪৪
৫. নিজের জন্য যেটা কল্যাণকর সেটা অন্যের জন্যও করতে হবে।
عَنْ أَنَسٍ عَنِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ
حَتَّى يُحِبَّ لِأَخِيهِ مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ
আনাস রা. হতে বর্ণিত,
নবী সা. বলেনঃ তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য সেটাই পছন্দ করবে, যা তার নিজের জন্য পছন্দ করে।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ২ : ঈমান, অধ্যায় ৭, হাঃ ১৩; মুসলিম, পর্ব ১: ঈমান, অধ্যায় ১৭, হাঃ ৪৫
৬. মুনাফিকের আলামত।
حَدِيْثُ عَبْدِ اللهِ
بْنِ عَمْرٍو أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَرْبَعٌ مَنْ كُنَّ
فِيهِ كَانَ مُنَافِقًا خَالِصًا وَمَنْ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنْهُنَّ كَانَتْ
فِيهِ خَصْلَةٌ مِنْ النِّفَاقِ حَتَّى يَدَعَهَا إِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ وَإِذَا
حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا عَاهَدَ غَدَرَ وَإِذَا خَاصَمَ فَجَرَ
’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর রা. হতে বর্ণিত,
নবী সা. বলেনঃ চারটি স্বভাব যার মধ্যে বিদ্যমান সে হবে খাঁটি মুনাফিক। যার মধ্যে এর কোন একটি স্বভাব থাকবে, তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকের একটি স্বভাব থেকে যায়। ১. আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে; ২. কথা বললে মিথ্যা বলে; ৩. অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে; এবং ৪. বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীল গালি দেয়।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ২; উমান,
অধ্যায় ২৪ হাঃ ৩৪;
মুসলিম, পর্ব ১: ঈমান, অধ্যায় ২৫,
হাঃ ৫৮
৭. কোন মুসলিমকে গালি দেওয়া যাবে না।
. عَنْ عَبْدُ اللهِ أَنَّ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ وَقِتَالُهُ
كُفْرٌ
আব্দুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ রা. হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, কোন মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসিক্বি এবং তাদের সাথে যুদ্ধ করা কুফরী।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ২: ঈমান, অধ্যায় ৩৬, হাঃ ৪৮; মুসলিম, পর্ব ১: ঈমান, অধ্যায় ২৫, হাঃ ৬৪
৮. কবিরাহ গোনাহ
عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ
اللهُ عَنْهُ قَالَ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْكَبَائِرِ قَالَ
الْإِشْرَاكُ بِاللهِ وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ وَقَتْلُ النَّفْسِ وَشَهَادَةُ
الزُّورِ
আনাস রা. বলেন,
রাসূলুল্লাহ সা.-কে কাবীরাহ গুনাহ (বড় পাপ) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়। তিনি সা.বললেন, আল্লাহ তা’আলার সাথে শিরক্ করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া, কোন মানুষকে হত্যা করা এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ৫২ : সাক্ষ্যদান, অধ্যায় ১০, হাঃ ২৬৫৩; মুসলিম, পর্ব ১: ঈমান, অধ্যায় ৩৭, হাঃ ৮৭
৯. কাউকে অস্ত্রের ভয় দেখানো যাবে না।
عَنْ عَبْدِ اللهِ
بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ
مَنْ حَمَلَ عَلَيْنَا السِّلَاحَ فَلَيْسَ مِنَّا
’আবদুল্লাহ ইবনু উমার রা. বলেন,
রসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি উম্মাতে মুহাম্মাদীর উপর অস্ত্র উঠালো, সে আমার উম্মাতের অন্তর্ভুক্ত নয়।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ৯২ ; ফিতনা, অধ্যায় ৭, হাঃ ৭০৭০; মুসলিম, পর্ব ১: ঈমান, অধ্যায় ৪০, হাঃ ৯৮
১০. যেটা জাহেলিয়াতের কাজ।
عَنْ عَبْدِ
اللهِ بن مسعود عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ
لَيْسَ مِنَّا مَنْ ضَرَبَ الْخُدُودَ وَشَقَّ الْجُيُوبَ وَدَعَا بِدَعْوَى
الْجَاهِلِيَّةِ
আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস’ঊদ রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
নবী সা. ইরশাদ করেছেনঃ যারা শোকে গালে চপেটাঘাত করে, জামার বক্ষ ছিন্ন করে ও জাহিলী যুগের মত চিৎকার দেয়, তারা আমাদের দলভুক্ত নয়।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ২৩: জানাযা, অধ্যায় ৩৯, হাঃ ১২৯৬; মুসলিম, পর্ব ১: ঈমান, অধ্যায় ৪১, হাঃ ৯৬
১১. চোগলখোর জান্নাতে যাবে না।
عَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ
سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَتَّاتٌ
হুযাইফাহ রা. বলেন,
আমি নবী সা. এর নিকট বলতে শুনেছি তিনি বলেন, চোগলখোর ব্যক্তি (যে একে অন্যের পরনিন্দা করে) জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
( সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ৭৮: আদব-আচার, অধ্যায় ৫০, হাঃ ৬০৫৬; মুসলিম, পর্ব ১: ঈমান, অধ্যায় ৪৪, হাঃ ১০৫ )
১২. ইসলাম গ্রহণ করলে পূর্বেল সকল গোনাহ ক্ষমা হয়ে যায়।
عَنْ
ابْنِ مَسْعُودٍ
رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللهِ أَنُؤَاخَذُ بِمَا
عَمِلْنَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ قَالَ مَنْ أَحْسَنَ فِي الإِسْلامِ لَمْ يُؤَاخَذْ
بِمَا عَمِلَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَمَنْ أَسَاءَ فِي الإِسْلامِ أُخِذَ
بِالْأَوَّلِ وَالْآخِرِ
ইবনু মাস্’উদ রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি জাহিলী যুগের কৃতকর্মের জন্য পাকড়াও হবো? তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি ইসলামী যুগে সৎ কাজ করবে সে জাহিলী যুগের কৃতকর্মের জন্য পাকড়াও হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণের পর অসৎ কাজ করবে, সে প্রথম ও পরবর্তী (ইসলাম গ্রহণের আগের ও পরের উভয় সময়ের কৃতকর্মের জন্য) পাকড়াও হবে।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ৮৮ : আল্লাহদ্রোহী ও মুরতাদদের প্রতি তাওবাহ করার আহ্বান এবং তাদের সঙ্গে কিতাল করা, অধ্যায় ১, হাঃ ৬৯২১; মুসলিম, পর্ব ১: ঈমান, অধ্যায় ৫৩, হাঃ ১২০
১৩. যখন একটি আমলের সওয়াব সাতগুণ বৃদ্ধি করা হয়।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم صلى الله عليه وسلم إِذَا أَحْسَنَ أَحَدُكُمْ إِسْلَامَهُ فَكُلُّ حَسَنَةٍ
يَعْمَلُهَا تُكْتَبُ لَهُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ
وَكُلُّ سَيِّئَةٍ يَعْمَلُهَا تُكْتَبُ لَهُ بِمِثْلِهَا
আবূ হুরায়রাহ্ রা. হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সা. ইরশাদ করেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যখন উত্তমরূপে ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে তখন সে যে আমলে সালেহ করে তার প্রত্যেকটির বিনিময়ে সাতশ গুণ পর্যন্ত (সওয়াব) লেখা হয়। আর সে যে পাপ কাজ করে তার প্রত্যেকটির বিনিময়ে তার জন্য ঠিক ততটুকুই পাপ লেখা হয়।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ২: ঈমান, অধ্যায় ৩১, হাঃ ৪২; মুসলিম, পর্ব ১: ঈমান, অধ্যাঃ ৫৯, হাঃ ১২৯
১৪. জাহান্নামের হালকা শাস্তি ।
عَنِ النُّعْمَانِ قال سَمِعْتُ
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ إِنَّ أَهْوَنَ أَهْلِ النَّارِ عَذَابًا
يَوْمَ الْقِيَامَةِ لَرَجُلٌ تُوضَعُ فِي أَخْمَصِ قَدَمَيْهِ جَمْرَةٌ يَغْلِي
مِنْهَا دِمَاغُهُ
নু’মান ইবনু বাশীর রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
আমি নবী সা.-কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তির সবচেয়ে হাল্কা ’আযাব হবে, যার দু’পায়ের তালুতে রাখা হবে প্রজ্জ্বলিত অঙ্গার, তাতে তার মগয উথলাতে থাকবে।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ৮১: সদয় হওয়া, অধ্যায় ৫১, হাঃ ৬৫৬১; মুসলিম, পর্ব পর্ব ১, অধ্যায় ৯১, হাঃ ২১৩
১৫. দাড়ি লম্বা আর গোঁফ ছোট করা।
عَنْ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
خَالِفُوا الْمُشْرِكِينَ وَفِّرُوا اللِّحَى وَأَحْفُوا الشَّوَارِبَ
ইবনু ’উমার রা. সূত্রে নবী সা.হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন,
তোমরা মুশরিকদের বিপরীত করবেঃ দাঁড়ি লম্বা রাখবে, গোঁফ ছোট করবে।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ৭৭ : পোশাক, ৬৪, হাঃ ৫৮৯২; মুসলিম, পর্ব ২: পবিত্রতা, অধ্যায় ১৬, হাঃ ২৫৯
১৬. শিষ্টাচার সম্পর্কে ।
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم إِذَا شَرِبَ أَحَدُكُمْ فَلاَ يَتَنَفَّسْ فِي الْإِنَاءِ وَإِذَا أَتَى
الْخَلَاءَ فَلاَ يَمَسَّ ذَكَرَهُ بِيَمِينِهِ وَلاَ يَتَمَسَّحْ بِيَمِينِهِ
আবূ কাতাদাহ রা. হতে বর্ণিত,
তিনি বলেনঃ আল্লাহর রসূল সা. বলেন,
তোমাদের কেউ যখন পান করে, তখন সে যেন পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস না ছাড়ে। আর যখন শৌচাগারে যায় তখন তার পুরুষাঙ্গ যেন ডান হাত দিয়ে স্পর্শ না করে এবং ডান হাত দিয়ে যেন শৌচকার্য না করে।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ৪: উযূ, অধ্যায় ১৮, হাঃ ১৫৩; মুসলিম, পর্ব ২: পবিত্রতা, অধ্যায় ১৮, হাঃ ২৬৭
১৭. কুকুর পাত্রে কোন পান করলে করণীয়।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه
وسلم قَالَ إِذَا شَرِبَ الْكَلْبُ فِي إِنَاءِ أَحَدِكُمْ فَلْيَغْسِلْهُ سَبْعًا
আবূ হুরায়রাহ্ রা. হতে বর্ণিত,
আল্লাহর রসূল সা. বলেছেন তোমাদের কারো পাত্রে যদি কুকুর পান করে তবে তা যেন সাতবার ধুয়ে নেয়।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ৬০ ; নাবীগণের (আঃ) হাদীসসমূহ, অধ্যায় ৩৩, হাঃ ১৭২; মুসলিম, পর্ব ২: পবিত্রতা, অধ্যায় ২৭, হাঃ ২৭৯
১৮. রমযান মাসের আগমনে।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا دَخَلَ شَهْرُ رَمَضَانَ فتِّحَتْ أَبْوَابُ
السَّمَاءِ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ، وَسُلْسِلَتِ الشَّيَاطيِنُ
আবু হুরায়রাহ্ রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলতেন,
আল্লাহর রাসূল সা. বলেছেনঃ রমযান আসলে আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় আর শয়তানগুলোক শিকলবন্দী করে দেয়া হয়।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ৩০; সওম, অধ্যায় ৫, হাঃ ১৮৯৯; মুসলিম, পর্ব ১৩: সওম, অধ্যায় ১, হাঃ ১০৭৯
১৯. সাহরীতে বরকত রয়েছে।
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ
النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: تَسَحَّرُوا فَإِنَّ فِي
السَّحُورِ بَرَكَةً
আনাস বিন মালিক রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, তোমরা সাহারী খাও, কেননা সাহারীতে বারাকাত নিহিত।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ৩০: সওম, অধ্যায় ১০, হাঃ ১৯২৩; মুসলিম, পর্ব ১৩ : সওম, অধ্যায় ৯, হাঃ ১০৯৫
২০. তারাতাড়ি ইফতার করার ফযিলত।
عَنْ سَهْلِ بْنِ
سَعْدٍ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: لاَ
يَزالُ النَّاسُ بِخَيْرٍ مَا عَجَّلُوا الْفِطْرَ
সাহল ইবনু সা’দ রা. হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সা. বলেছেনঃ লোকরা যতদিন শীঘ্ৰ ইফতার করবে,
ততদিন তারা কল্যাণের উপরে থাকে।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ৩০: সওম, অধ্যায় ৪৫, হাঃ ১৯৫৭; মুসলিম, পৰ্ব ১৩ : সওম, অধ্যায় ৯, হাঃ ১০৯৮
২১. সালাম দেয়ার পদ্ধতি।
عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
يُسَلِّمُ الرَّاكِبُ عَلَى الْمَاشِي، وَالْمَاشِي عَلَى الْقَاعِدِ،
وَالْقَلِيلُ عَلَى الْكَثِيرِ
আবু হুরাইরাহ রা. হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেনঃ আরোহী ব্যক্তি পদচারীকে,
পদচারী ব্যক্তি উপবিষ্টকে এবং অল্প সংখ্যক লোক অধিক সংখ্যককে সালাম করবে।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ৭৯; অনুমতি প্রার্থনা, অধ্যায় ৫, হাঃ ৬২৩২; মুসলিম, পর্ব ৩৯ : সালাম, অধ্যায় ১, হাঃ ২১৬০
২২. কাউকে তার স্থান থেকে তুলে দিয়ে বসা যাবে না।
عَنْ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ، قَالَ: لاَ يُقِيمُ الرَّجُلُ الرَّجُلَ مِنْ مَجْلِسِهِ ثُمَّ
يَجْلِسُ فِيهِ
ইবনু ’উমার রা. হতে বর্ণিত। নবী সা. বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি অপর কাউকে তার বসার জায়গা থেকে তুলে দিয়ে সে সেখানে বসবে না।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ৭৯: অনুমতি প্রার্থনা, অধ্যায় ৩১, হাঃ ৬২৬৯; মুসলিম, পর্ব ৩৯; সালাম, অধ্যায় ১১, হাঃ ২১৭৭
২৩. চুপে চুপে কথা বলা।
عَنْ عَبْدِ اللهِ
بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ، قَالَ: إِذَا كَانُوا ثَلاَثَةً فَلاَ
يَتَنَاجى اثْنَانِ دُونَ الثَّالِثِ
আবদুল্লাহ রা. হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সা. বলেছেনঃ যদি কোথাও তিনজন লোক থাকে তবে তৃতীয় জনকে বাদ দিয়ে দু’জনে মিলে চুপি চুপি কথা বলবে না।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ৭৯: অনুমতি প্রার্থনা, অধ্যায় ৪৫, হাঃ ৬২৮৮; মুসলিম, পর্ব ৩৯ : অধ্যায় হাঃ ২১৮৩
২৪. জ্বর মূলত জাহান্নামের তাপ।
عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: الْحُمَّى مِنْ فَوْحِ جَهَنَّمَ،
فَابْرُدُوهَا بِالْمَاءِ
রাফি ইবনু খাদীজ রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
আমি রাসূলুল্লাহ সা. কে বলতে শুনেছিঃ জ্বর হল জাহান্নামের উত্তাপ থেকে সৃষ্ট। কাজেই তোমরা তা পানির দ্বারা ঠাণ্ডা করে নিও।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ৭৬: চিকিৎসা, অধ্যায় ২৮, হাঃ ৫৭২৬; মুসলিম, পর্ব ৩৯; সালাম, অধ্যায় ২৬, হাঃ ২২১২
২৫. ঝগড়া করা ভালো নয়।
عَنْ عَائِشَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ، قَالَ: إِنَّ أَبْغَضَ الرِّجَالِ إِلَى اللهِ، الأَلَدُّ الْخَصِمُ
’আয়িশাহ রা. হতে বর্ণিত। নবী সা. বলেছেন,
আল্লাহর নিকট সেই লোক সবচেয়ে বেশী ঘৃণিত, যে অতি ঝগড়াটে।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ৪৬: অত্যাচার, কিসাস ও লুণ্ঠন, অধ্যায় ১৫, হাঃ ২৪৫৭; মুসলিম, পর্ব ৪৭; ইলম, অধ্যায় ২, হাঃ ২৬৬৮
২৬. কিয়ামতের কতিপয় ছোট আলামত।
عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ يُرْفَعَ العِلْمُ،
وَيَثْبُتَ الْجَهْلُ، وَيُشْرَبَ الْخَمْرُ، وَيَظْهَرَ الزِّنَا
আনাস রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
আল্লাহর রাসূল সা. বলেছেন যে, কিয়ামতের কিছু ’আলমত হল ও ইলম হ্রাস পাবে, অজ্ঞতা প্রসার লাভ করবে, মদপানের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং যেনা ব্যভিচার বিস্তার লাভ করবে।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ৩: ইলম (ধর্মীয় জ্ঞান), অধ্যায় ২১, হাঃ ৮০; মুসলিম, পর্ব ৪৭: ইলম, অধ্যায় ৪, হাঃ ২৬৭১
২৭. ইলম বা জ্ঞান উঠে যাবে যেভাবে।
عَنْ عَبْدِ اللهِ
بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُول: إِنَّ الله لاَ يَقْبِضُ الْعِلْمَ انْتِزَاعًا،
يَنْتَزِعُهُ مِنَ الْعِبَادِ وَلكِنْ يَقْبِضُ الْعِلْمَ بِقبْضِ الْعُلَمَاءِ
حَتَّى إِذَا لَمْ يُبْقِ عَالِمًا، اتَّخَذَ النَّاسُ رُءُوسًا جُهَّالاً،
فَسُئِلُوا، فَأَفْتَوْا بغَيْرِ عِلْمٍ، فَضَلُّوا وَأَضَلُّوا
’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর ইবনুল ’আস রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
আমি আল্লাহর রাসূল সা. কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের অন্তর থেকে ইলম উঠিয়ে নেন না, কিন্তু দ্বীনের আলিমদের উঠিয়ে নেয়ার ভয় করি। যখন কোন আলিম অবশিষ্ট থাকবে না তখন লোকরা মূর্খখদেরকেই নেতা বানিয়ে নিবে। তাদের জিজ্ঞেস করা হলে না জানলেও ফাতাওয়া প্রদান করবে। ফলে তারা নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে, এবং অন্যকেও পথভ্রষ্ট করবে।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ৩: ‘ইলম (ধর্মীয় জ্ঞান), অধ্যায় ৩৪, হাঃ ১০০; মুসলিম, পর্ব ৪৭: ইলম, অধ্যায় ৪, হাঃ ২৬৭৩
২৮. জান্নাতের একটি বৃক্ষের প্রশস্ততা।
عَنْ سَهْلِ بْنِ
سَعْدِ، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ فِي
الْجَنَّةِ لَشَجَرَةً يَسِيرُ الرَّاكِبُ فِي ظِلِّهَا مِائَةَ عَامٍ لاَ
يَقْطَعُهَا
সাহ্ল ইবনু সা’দ রা. সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ সা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ জান্নাতের মাঝে এমন একটি বৃক্ষ হবে যার ছায়ার মাঝে একজন আরোহী একশ’ বছর পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবে,
তবুও বৃক্ষের ছায়াকে অতিক্রম করতে পারবে না।
সহীহুল বুখারী, পূর্ব ৮১: সদয় হওয়া, অধ্যায় ৫১, হাঃ ৬৫৫২; মুসলিম, পর্ব ৫১ : সান্নাত, তার বিবরণ, অনন্দ-উপভোগ ও তার বাসিন্দা,অধ্যায় ১, হাঃ ২৮৫২
২৯. ইসলামের স্তম্ভ বা খুটি পাঁচটি।
عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُولُ
اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم بُنِيَ الإِسْلامُ عَلَى خَمْسٍ
شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ صلى
الله عليه وسلم وَإِقَامِ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَالْحَجِّ وَصَوْمِ
رَمَضَانَ
ইবনু ’উমার রা. হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সা. ইরশাদ করেন, ইসলামের স্তম্ভ হচ্ছে পাঁচটি। ১. আল্লাহ্ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল-এ কথার সাক্ষ্য প্রদান। ২. সালাত কায়িম করা। ৩. যাকাত আদায় করা। ৪. হাজ্জ সম্পাদন করা এবং ৫. রমাযানের সওমব্রত পালন করা।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ২: ঈমান, অধ্যায় ২, হাঃ ৮; মুসলিম, পর্ব ১: ঈমান, অধ্যায় ৫, হাঃ ১৬
৩০. লজ্জা ইমানের শাখা।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ الإِيمَانُ بِضْعٌ وَسِتُّونَ شُعْبَةً
وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الْإِيمَانِ
আবূ হুরায়রাহ্ রা. হতে বর্ণিত,
নবী সা. বলেছেন, ঈমানের ষাটেরও অধিক শাখা রয়েছে। আর লজ্জা হচ্ছে ঈমানের একটি শাখা।
সহীহুল বুখারী, পর্ব ২: ঈমান, অধ্যায় ৩, হাঃ ৯; মুসলিম, পর্ব ১: ঈমান, অধ্যায় ১২, হাঃ ৩৫
৩১. মায়ের মর্যাদা।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
ـ رضى الله عنه ـ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ أَحَقُّ بِحُسْنِ صَحَابَتِي قَالَ "
أُمُّكَ ". قَالَ ثُمَّ مَنْ قَالَ " أُمُّكَ ". قَالَ
ثُمَّ مَنْ قَالَ " أُمُّكَ ". قَالَ ثُمَّ مَنْ قَالَ "
ثُمَّ أَبُوكَ "
আবূ হুরাইরাহ রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
এক লোক রাসূলুল্লাহ সা. এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমার নিকট কে উত্তম ব্যবহার পাওয়ার অধিক হকদার? তিনি বললেনঃ তোমার মা। লোকটি বললঃ অতঃপর কে? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার মা। সে বললঃ অতঃপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে বললঃ অতঃপর কে? তিনি বললেনঃ অতঃপর তোমার বাপ।
(মুসলিম ৪৫/১, হাঃ ২৫৪৮, আধুনিক প্রকাশনী- ৫৫৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৩৩)
৩২. অন্যের পিতা-মাতাকে গালি দেয়া যাবে না।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ
بْنِ عَمْرٍو ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِنَّ مِنْ أَكْبَرِ الْكَبَائِرِ أَنْ يَلْعَنَ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِ
". قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَكَيْفَ يَلْعَنُ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِ
قَالَ " يَسُبُّ الرَّجُلُ أَبَا الرَّجُلِ، فَيَسُبُّ أَبَاهُ، وَيَسُبُّ
أَمَّهُ
’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কবীরা গুনাহসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো নিজের পিতা-মাতাকে লা’নত করা। জিজ্ঞেস করা হলোঃ হে আল্লাহর রাসূল! আপন পিতা-মাতাকে কোন লোক কীভাবে লা’নত করতে পারে? তিনি বললেনঃ সে অন্যের পিতাকে গালি দেয়, তখন সে তার পিতাকে গালি দেয় এবং সে অন্যের মাকে গালি দেয়, তখন সে তার মাকে গালি দেয়।
(মুসলিম ১/৩৮, হাঃ ৯০, আহমাদ ৬৫৪০, আধুনিক প্রকাশনী- ৫৫৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৩৫)
৩৩. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে যাবে না।
عَنْ جُبَيْرَ بْنَ
مُطْعِمٍ أَنَّهُ، سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لاَ
يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعٌ ".
যুবায়র ইবনু মুত’ইম রা. হতে বর্ণিত। তিনি নবী সা. কে বলতে শুনেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
(মুসলিম ৪৫/৬, হাঃ ২৫৫৬, আহমাদ ১৬৭৩২, আধুনিক প্রকাশনী- ৫৫৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৪৫)
৩৪. আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করার ফযিলত।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
ـ رضى الله عنه ـ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
" مَنْ سَرَّهُ أَنْ يُبْسَطَ لَهُ فِي رِزْقِهِ، وَأَنْ يُنْسَأَ لَهُ فِي
أَثَرِهِ، فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ ".
আবূ হুরাইরাহ রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
আমি রাসূলুল্লাহ সা. কে বলতে শুনেছিঃ যে লোক তার জীবিকা প্রশস্ত করতে এবং আয়ু বৃদ্ধি করতে চায়,
সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে।
(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৫৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৪৬)
৩৫. বৃক্ষরোপণ করার ফযিলত।
عَنْ أَنَسِ بْنِ
مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَا مِنْ مُسْلِمٍ
غَرَسَ غَرْسًا فَأَكَلَ مِنْهُ إِنْسَانٌ أَوْ دَابَّةٌ إِلاَّ كَانَ لَهُ صَدَقَةً
".
আনাস ইবনু মালিক হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
নবী সা. বলেছেনঃ কোন মুসলিম যদি গাছ লাগায়, আর তাত্থেকে কোন মানুষ বা জানোয়ার কিছু খায়, তবে তা তার জন্য সাদাকা্য় পরিগণিত হবে।
(বুখারী ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হা ৫৪৭৪)
৩৬. সামর্থ্য থাকলে বিয়ে করতে হবে।
عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ: «يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمُ الْبَاءَةَ
فَلْيَتَزَوَّجْ فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَمَنْ لَمْ
يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ»
’আব্দুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে যুবক সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যে বিবাহের সামর্থ্য রাখে সে যেন অবশ্যই বিবাহ করে। কেননা বিবাহ দৃষ্টি অবনত করে ও লজ্জাস্থানের অধিক অধিক হিফাযাত করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম (রোযা) রাখে। কেননা, সওম তার জন্য ঢালস্বরূপ (অর্থাৎ- অবৈধ যৌনচাহিদা থেকে বিরত রাখে)। [1]
[1] সহীহ : বুখারী ৫০৬৬, মুসলিম ১৪০০, নাসায়ী ৩২১০, তিরমিযী ১০৮১, আহমাদ ৪০২৩, ইরওয়া ১৭৮১, সহীহ আল জামি‘ ৭৯৭৫।
৩৭. চারটি গুণ দেখে বিবাহ করা হয়, তবে দ্বীনদারীতাকে
প্রাধান্য দিতে হবে।
وَعَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: تُنْكَحُ
الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ: لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا
فَاظْفَرْ بِذَات الدّين تربت يداك
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)! (বুখারী ও মুসলিম)[1]
[1] সহীহ : বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।
৩৮. সালাম পারস্পারিক ভালোবাসা বৃদ্ধি করে।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
قَالَ: قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ
حَتَّى تُؤْمِنُوا وَلَا تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا أَو لَا أدلكم على شَيْء
إِذا فعلمتموه تحاببتم؟ أفشوا السَّلَام بَيْنكُم» رَوَاهُ مُسلم
আবূ হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা ঈমান গ্রহণ করবে। আর ততক্ষণ পর্যন্ত প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা পরস্পরকে ভালোবাসবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন কথা বলে দেব, যার উপর ’আমল করলে তোমাদের পারস্পরিক ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে। (তা হলো) তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালামের প্রচলন করবে। [1]
[1] সহীহ : মুসলিম (৫৪)-৯৩, আহমাদ ৯০৮৫, আল জামি‘উস্ সগীর ১৩০৩৭, সহীহুল জামি‘ ৭০৮১, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২৬৯৪, তিরমিযী ২৬৮৮, ইবনু মাজাহ ৩৬৯২, আবূ দাঊদ ৫১৯৩, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ১৯৪৪০, ইবনু আবূ শায়বাহ্ ২৫৭৪৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ২৩৬, শু‘আবুল ঈমান ৬৬১৩, ‘বায়হাক্বী’র কুবরা ২১৫৯৫, আল মুসতাদরাক ৭৩১০।
৩৯. সালাম দেয়ার নিয়ম।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يُسَلِّمُ الصَّغِيرُ عَلَى
الْكَبِيرِ وَالْمَارُّ عَلَى الْقَاعِدِ وَالْقَلِيلُ عَلَى الْكَثِيرِ»
আবূ হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ছোট বা কম বয়সী বয়োজ্যেষ্ঠকে, পদব্রজে অতিক্রমকারী বসা ব্যক্তিকে ও কম সংখ্যক লোক বেশি সংখ্যক লোককে সালাম দেবে। (বুখারী)[1]
[1] সহীহ : বুখারী ৬২৩১, ৬২৩৪; তিরামিযী ২৭০৪, আবূ দাঊদ ৫১৯৮, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ১১৪৯, সহীহ আল জামি‘উস্ সগীর ৮০৯০, সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ৭৬৮, শু‘আবুল ইমান ৮৮৬৪, ‘বায়হাক্বী’র কুবরা ১৯১৮৮, ‘ত্ববারানী’র আল মু‘জামুল কাবীর ১৫১৯৯, দারিমী ২৬৩৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪৯৭, আবূ ইয়া‘লা ৬২৩৪, আহমাদ ৮১৬২, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ১৯৪৪৫।
৪০. ছোটদেরকে আগে সালাম দেয়া সুন্নাত।
وَعَن أَنَسٍ
قَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مر على غلْمَان
فَسلم عَلَيْهِم
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদল বালকের নিকট দিয়ে অতিক্রম করলেন এবং তাদের সালাম দিলেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
[1] সহীহ : বুখারী ৬২৪৭, মুসলিম (২১৬৮)-১৪, আবূ দাঊদ ৫২০২, তিরমিযী ২৬৯৬, সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ৮০০, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ১২৭৮, আবূ ইয়া‘লা ৩৩৬৬, ‘নাসায়ী’র কুবরা ১০১৬৩, দারিমী ২৬৩৬।
৪১. সময় থাকতে বেশি বেশি সৎআমল করতে হবে।
وَعَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم: «بَادرُوا
بِالْأَعْمَالِ فِتناً كَقِطَعِ اللَّيْلِ الْمُظْلِمِ يُصْبِحُ الرَّجُلُ
مُؤْمِنًا وَيُمْسِي كَافِرًا وَيُمْسِي مُؤْمِنًا وَيُصْبِحُ كَافِرًا يَبِيعُ
دِينَهُ بِعرْض من الدُّنْيَا» . رَوَاهُ مُسلم
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: তোমরা ভালো ’আমলের দিকে দ্রুত অগবর্তী হও ঘুটঘুটে তিমির রাত্রির অংশ সদৃশ ফিতনার পতিত হওয়ার পূর্বেই যখন কোন লোক ভোরে উঠবে ঈমানদার হয়ে আর সন্ধ্যা করবে কুফরী অবস্থায় এবং সন্ধ্যা করবে মু’মিন অবস্থায় আর প্রভাতে উঠবে কাফির হয়ে। সে ইহকালীন সামান্য সম্পদের বিনিময়ে নিজের দীন ও ঈমানকে বিক্রয় করে দেবে।
সহীহ: মুসলিম ১৮৬-(১১৮), তিরমিযী ২১৯৫, সহীহুল জামি ২৮১৪, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ) সিলসিলাতুস সহীহাহ ৭৫৮, মুসনাদে আহমাদ ৮০১৭, আবূ ইয়া'লা ৬৫১৫, সহীহ ইবনু হিব্বান ৬৭০৪, আল মু’জামুল কাবীর লিত্ব তবারানী ৫৫৮, আল মু'জামুল আওসাত্ব ২৭৭৪।
৪২. কোন সৃষ্টির নামে কসম করা যাবে না।
عَنِ ابْنِ عُمَرَ
رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَاأَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ
اللَّهَ يَنْهَاكُمْ أَنْ تَحْلِفُوا بِآبَائِكُمْ مَنْ كَانَ حَالِفًا
فَلْيَحْلِفْ بِاللَّهِ أَوْ ليصمت»
ইবনু ’উমার (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা তোমাদের বাপ-দাদার নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। অতএব যদি কারো কসম করতেই হয়, সে যেন আল্লাহ তা’আলার নামেই কসম করে অথবা নিশ্চুপ থাকে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
[1] সহীহ : বুখারী ৬৬৪৬, মুসলিম ১৬৪৬, আবূ দাঊদ ৩২৪৯, তিরমিযী ১৫৩৪, আহমাদ ৬২৮৮, দারিমী ২৩৮৬, ইরওয়া ২৫৬০, সহীহ আত্ তারগীব ২৬।
৪৩. কুরআন শিক্ষা করার ফযিলত।
عَنْ
عُثْمَانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خَيْرُكُمْ من تعلم الْقُرْآن وَعلمه» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
উসমান রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই উত্তম, যে কুরআন শিক্ষা করে এবং তা (মানুষকে) শিক্ষা দেয়। (বুখারী)[1]
[1] সহীহ : বুখারী ৫০২৭, আবূ দাঊদ ১৪৫২, তিরমিযী ২৯০৭, আহমাদ ৫০০, শু‘আবূল ঈমান ১৭৮৫, সহীহ ইবনু হিব্বান ১১৮, সহীহাহ্ ১১৭৩, সহীহ আত্ তারগীব ১৪১৫, সহীহ আল জামি‘ ৩৩১৯।
৪৪. দুইটা কারণে হিংসা করা যায়।
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا حَسَدَ إِلَّا على اثْنَيْنِ: رَجُلٌ آتَاهُ
اللَّهُ الْقُرْآنَ فَهُوَ يَقُومُ بِهِ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ
وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالًا فَهُوَ يُنْفِقُ مِنْهُ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ
النَّهَار
’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’টি ব্যতীত অন্য কোন বিষয়ে ঈর্ষা করা যায় না। প্রথম, সে ব্যক্তি যাকে আল্লাহ কুরআনের (’ইলম) দান করেছেন, আর সে তা দিন-রাত অধ্যয়ন করে। দ্বিতীয়, ঐ ব্যক্তি যাকে আল্লাহ ধন-সম্পদ দান করেছেন এবং তা সে সকাল সন্ধ্যায় দান করে। (বুখারী, মুসলিম)[1]
[1] সহীহ : বুখারী ৭৫২৯, মুসলিম ৮১৫, ইবনু মাজাহ ৪২০৯, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক্ব ৫৯৭৪, আহমাদ ৪৫৫০, সুনানুল কাবীর লিল বায়হাক্বী ৭৮২১, সহীহ ইবনু হিববান ১২৫, সহীহ আত্ তারগীব ৬৩৫, সহীহ আল জামি‘ ৭৪৮৭।
৪৫. কুরআন তেলাওয়াতকারীর উদাহরণ।
وَعَنْ أَبِي
مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ: «مثل الْمُؤمن الَّذِي يقْرَأ الْقُرْآن كَمثل الْأُتْرُجَّةِ رِيحُهَا
طِيبٌ وَطَعْمُهَا طَيِّبٌ وَمَثَلُ الْمُؤْمِنِ الَّذِي لَا يقْرَأ الْقُرْآن
كَمثل التمرة لَا ريح لَهَا وطعمها حلوومثل الْمُنَافِقِ الَّذِي لَا يَقْرَأُ
الْقُرْآنَ كَمَثَلِ الْحَنْظَلَةِ لَيْسَ لَهَا رِيحٌ وَطَعْمُهَا مُرٌّ وَمَثَلُ
الْمُنَافِقِ الَّذِي يقْرَأ الْقُرْآن مثل الريحانة رِيحهَا طيب وَطَعْمُهَا
مَرٌّ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
আবূ মূসা আল আশ্’আরী রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সা. বলেছেনঃ কুরআন পাঠকারী মু’মিনের দৃষ্টান্ত হলো তুরঞ্জ ফল বা কমলা লেবুর ন্যায়। যার গন্ধ ভাল, স্বাদও উত্তম। যে মু’মিন কুরআন পড়ে না, তার দৃষ্টান্ত হলো খেজুরের ন্যায়। এর কোন গন্ধ নেই বটে, কিন্তু উত্তম স্বাদ আছে। কুরআন পাঠ করে না যে মুনাফিক, সে হানাযালাহ্ (তিতা) ফলের মতো, যার কোন গন্ধ নেই অথচ স্বাদ তিতা। আর ওই মুনাফিক যে কুরআন পড়ে তার দৃষ্টান্ত ঐ ফুলের মতো, যার গন্ধ আছে কিন্তু স্বাদ তিতা। (বুখারী, মুসলিম।)
৪৬. ইমানের স্বাদ পাবে যারা।
وَعَن
الْعَبَّاس بن عبد الْمطلب قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ: «ذَاقَ طَعْمَ الْإِيمَانِ مَنْ رَضِيَ بِاللَّهِ رَبًّا
وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولًا» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ
’আব্বাস ইবনু ’আবদুল মুত্ত্বালিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক আল্লাহকে প্রতিপালক, ইসলামকে দীন এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে রসূল হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট, সে-ই ঈমানের স্বাদ পেয়েছে। [1]
[1] সহীহ : মুসলিম ৩৪, তিরমিযী ২৬২৩, আহমাদ ১৭৭৮, সহীহ ইবনু হিব্বান ১৬৯৪, সহীহ আল জামি‘ ৩৪২৫।
৪৭. দ্বীন ইসলামের মধ্যে সওয়াবের উদ্দেশ্যে কোন কিছু করা যাবে
না।
عَن عَائِشَة رَضِي
الله عَنهَا قَالَتْ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ أحْدَثَ في أمْرِنَا هَذَا مَا
لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ وفي رواية لمسلم مَنْ عَمِلَ
عَمَلاً لَيْسَ عَلَيهِ أمرُنا فَهُوَ رَدٌّ
আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আমার এই দ্বীনে (নিজের পক্ষ থেকে) কোন নতুন কথা উদ্ভাবন করল—যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য।[১]
মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে,
যে ব্যক্তি এমন কাজ করল, যে ব্যাপারে আমাদের নির্দেশ নেই তা বর্জনীয়।[২]
[১] বুখারী ২৬৯৭, মুসলিম ৪৫৮৯। [২] মুসলিম ৪৫৯০।
৪৮. হালাল – হারাম স্পষ্ট।
وَعَنِ النُّعمَانِ
بنِ بَشِيْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ
إنَّ الْـحَلاَلَ بَيِّنٌ وَإنَّ الْـحَرامَ بَيِّنٌ وَبَيْنَهُمَا مُشْتَبَهَاتٌ
لاَ يَعْلَمُهُنَّ كَثيرٌ مِنَ النَّاسِ فَمَنِ اتَّقَى الشُّبُهَاتِ اسْتَبْرَأَ
لِدِينهِ وَعِرْضِهِ وَمَنْ وَقَعَ فِي الشُّبُهَاتِ وَقَعَ في الحَرَامِ
كَالرَّاعِي يَرْعَى حَوْلَ الحِمَى يُوشِكُ أنْ يَرْتَعَ فِيهِ ألاَ وَإنَّ لكُلّ
مَلِكٍ حِمَىً ألاَ وَإنَّ حِمَى اللهِ مَحَارِمُهُ ألاَ وَإنَّ فِي الجَسَدِ
مُضْغَةً إِذَا صَلَحَت صَلَحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ
الْجَسَدُ كُلُّهُ ألاَ وَهِيَ القَلْبُ متفقٌ عَلَيْهِ
নু’মান ইবনে বাশীর রা. থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল সা. কে বলতে শুনেছি, অবশ্যই হালাল বিবৃত ও স্পষ্ট এবং হারাম বিবৃত ও স্পষ্ট, আর উভয়ের মাঝে রয়েছে বহু সন্দিহান বস্তু; যা অনেক লোকেই জানে না। অতএব যে ব্যক্তি এই সন্দিহান বস্তুসমূহ হতে দূরে থাকবে, সে তার দ্বীন ও ইজ্জতকে বাঁচিয়ে নেবে এবং যে ব্যক্তি সন্দিহানে পতিত হবে (সন্দিগ্ধ বস্তু ভক্ষণ করবে), সে হারামে পতিত হবে। (এর উদাহরণ সেই) রাখালের মত, যে নিষিদ্ধ চারণভূমির আশেপাশে পশু চরায়, তার পক্ষে নিষিদ্ধ সীমানায় পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শোন! প্রত্যেক বাদশাহরই সংরক্ষেত চারণভূমি থাকে। আর শোন! আল্লাহর সংরক্ষেত চারণভূমি হল তাঁর হারামকৃত বস্তুসমূহ। শোন! দেহের মধ্যে একটি মাংসপি- রয়েছে; যখন তা সুস্থ থাকে, তখন গোটা দেহটাই সুস্থ হয়ে থাকে। আর যখন তা খারাপ হয়ে যায়, তখন গোটা দেহটাই খারাপ হয়ে যায়। শোন! তা হল হৃৎপি- (অন্তর)।
(বুখারী ৫২, ২০৫১, মুসলিম ৪১৭৮)
৪৯. সন্দেহ জনক কাজ পরিহার করা।
عَنْ أَبِـيْ
مُـحَمَّدٍ الْحَسَنِ بنِ عَليِّ بنِ أَبِيْ طَالِبٍ رَضِيَ الله عَنهُما قَالَ :
حَفظْتُ مِنْ رَسُول الله ﷺ دَعْ مَا يَرِيْبُكَ إِلَى مَا لاَ يَرِيبُكَ ؛ فإنَّ
الصِّدقَ طُمَأنِينَةٌ وَالكَذِبَ رِيبَةٌ رواه الترمذي وَقالَ حديث صحيح
আবূ মুহাম্মাদ হাসান ইবনে আলী ইবনে আবী ত্বালেব রা. বলেন যে,
আমি রাসূলুল্লাহ সা. থেকে এই শব্দগুলি স্মরণ রেখেছি যে, তুমি ঐ জিনিস পরিত্যাগ কর, যে জিনিস তোমাকে সন্দেহে ফেলে এবং তা গ্রহণ কর যাতে তোমার সন্দেহ নেই। কেননা, সত্য প্রশান্তির কারণ এবং মিথ্যা সন্দেহের কারণ।
(তিরমিযী ২৫১৮)
৫০. কল্যাণ কামনা করা।
عَنْ
أَبِي رُقَيَّةَ تَمِيمِ بنِ أوسٍ الدَّارِيِّ أَنَّ النَّبيّ ﷺ قَالَ الدِّينُ
النَّصِيحةُ قُلنَا : لِمَنْ ؟ قَالَ لِلهِ وَلِكِتَابِهِ وَلِرَسُولِهِ وَلأئِمَّةِ
المُسْلِمِينَ وَعَامَّتِهِمْ رواه مسلم
আবূ রুক্বাইয়াহ তামীম বিন আওস দারী রা. হতে বর্ণিত, নবী সা. বলেন, দ্বীন হল কল্যাণ কামনা করার নাম। আমরা বললাম, ’কার জন্য?’ তিনি বললেন, আল্লাহর জন্য, তাঁর কিতাবের জন্য, তাঁর রসূলের জন্য, মুসলিমদের শাসকদের জন্য এবং মুসলিম জনসাধারণের জন্য। (মুসলিম ২০৫)
৫১. পূর্ববর্তী জাতী ধ্বংসের কারন।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ
عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ صَخْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْت رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه و سلم يَقُولُ: "مَا نَهَيْتُكُمْ عَنْهُ
فَاجْتَنِبُوهُ، وَمَا أَمَرْتُكُمْ بِهِ فَأْتُوا مِنْهُ مَا اسْتَطَعْتُمْ،
فَإِنَّمَا أَهْلَكَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ كَثْرَةُ مَسَائِلِهِمْ
وَاخْتِلَافُهُمْ عَلَى أَنْبِيَائِهِمْ ".رَوَاهُ
الْبُخَارِيُّ، وَمُسْلِمٌ
আবূ হুরায়রা আব্দুর রহমান ইবনু সাখর রা. হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন- আমি রাসূলুল্লাহ্ সা. কে বলতে শুনেছি: আমি তোমাদেরকে যেসব বিষয় নিষেধ করেছি, তা থেকে বিরত থাক। আর যেসব বিষয়ে আদেশ করেছি, যথাসম্ভব তা পালন কর। বেশী বেশী প্রশ্ন করা আর নবীদের সথে মতবিরোধ করা তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ধ্বংস করে দিয়েছে।
[বুখারীঃ ৭২৮৮, মুসলিম: ১৩৩৭]
৫২. রাগ নিয়ন্ত্রণ করা সফলতার অন্যতম মাধ্যম।
وَعَنْ
أَبِيْ هُرَيْرَةَ أنَّ رَجُلاً قَالَ لِلنَّبِيِّ ﷺ أَوْصِنِي قَالَ لاَ تَغْضَبْ
فَرَدَّدَ مِرَاراً قَالَ لاَ تَغْضَبْ رواه
البخاري
আবূ হুরাইরা রা. বলেন,
এক ব্যক্তি নবী সা. কে বলল, ’আপনি আমাকে কিছু অসিয়ত করুন!’ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম), তুমি রাগাম্বিত হয়ো না। সে ব্যক্তি এ কথাটি কয়েকবার বলল। তিনি (প্রত্যেক বারেই একই কথা) বললেন, তুমি রাগান্বিত হয়ো না।
(বুখারী ৬১১৬)
৫৩. প্রাণীদের প্রতি দয়া করতে হবে।
عَنْ أَبِي يَعْلَى
شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه و
سلم قَالَ: "إنَّ اللَّهَ كَتَبَ الْإِحْسَانَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ، فَإِذَا
قَتَلْتُمْ فَأَحْسِنُوا الْقِتْلَةَ، وَإِذَا ذَبَحْتُمْ فَأَحْسِنُوا
الذِّبْحَةَ، وَلْيُحِدَّ أَحَدُكُمْ شَفْرَتَهُ، وَلْيُرِحْ ذَبِيحَتَهُ". [رَوَاهُ مُسْلِمٌ].
আবূ ইয়া’লা শাদ্দাদ ইবনু আওস রা. হতে বর্ণিত হয়েছে,
রাসূলুল্লাহ্ সা. বলেছেন: নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ সমস্ত জিনিস উত্তম পদ্ধতিতে করার বিধান করে দিয়েছেন। সুতরাং যখন তুমি হত্যা করবে, তখন উত্তম পদ্ধতিতে হত্যা করবে আর যখন তুমি যবেহ করবে, তখন উত্তম পদ্ধতিতে যবেহ করবে। তোমাদের প্রত্যেকের আপন ছুরি ধারালো করে নেয়া উচিত ও যে জন্তুকে যবেহ করা হবে তার কষ্ট লাঘব করা উচিত।
[মুসলিম: ১৯৫৫]
৫৪. পুণ্যের কাজ পাপকে মিটিয়ে দেয়।
عَنْ
أَبِـيْ ذَرٍّ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ لَهُ اتَّقِ اللهَ حَيْثُمَا كُنْتَ
وَأَتْبِعْ السَّيِّئَةَ الْحَسَنَةَ تَمْحُهَا وَخَالِقْ النَّاسَ بِخُلُقٍ
حَسَنٍ
আবূ যার রা. কর্তৃক বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সা. তাঁকে বলেছেন, তুমি যেখানেই থাক আল্লাহকে ভয় কর, পাপ করলে সাথে সাথে পুণ্যও কর; যাতে পাপ মোচন হয়ে যায় এবং মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহার কর।
(আহমাদ ২১৩৫৪, তিরমিযী ১৯৮৭, হাকেম ১৭৮, সহীহুল জামে ৯৭)
৫৫. অতিগুরুত্বপূর্ণ
চারটি উপদেশ ।
عَن ابْنِ عَبَّاسٍ
رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : كُنْتُ خَلْفَ النَّبيِّ ﷺ يَوماً فَقَالَ يَا
غُلامُ إنِّي أُعَلِّمُكَ كَلِمَاتٍ : احْفَظِ اللهَ يَحْفَظْكَ احْفَظِ اللهَ
تَجِدْهُ تُجَاهَكَ إِذَا سَألْتَ فَاسأَلِ الله وإِذَا اسْتَعَنتَ فَاسْتَعَن
باللهِ وَاعْلَمْ : أنَّ الأُمَّةَ لَوْ اجْتَمَعَتْ عَلَى أنْ يَنْفَعُوكَ
بِشَيءٍ لَمْ يَنْفَعُوكَ إلاَّ بِشَيءٍ قَدْ كَتَبهُ اللهُ لَكَ وَإِن اجتَمَعُوا
عَلَى أنْ يَضُرُّوكَ بِشَيءٍ لَمْ يَضُرُّوكَ إلاَّ بِشَيءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللهُ
عَلَيْكَ رُفِعَتِ الأَقْلاَمُ وَجَفَّتِ الصُّحفُ رواه الترمذي وَقالَ حديث حسن
صحيح
ইবনে আব্বাস রা. বলেন,
আমি একদা (সওয়ারীর উপর) রাসূলুল্লাহ সা. এর পিছনে (বসে) ছিলাম। তিনি বললেন, ওহে কিশোর! আমি তোমাকে কয়েকটি (গুরুত্বপূর্ণ) কথা (শিক্ষা দেব (তুমি সেগুলো স্মরণ রেখো)। তুমি আল্লাহর (বিধানসমূহের) রক্ষণাবেক্ষণ কর (তাহলে) আল্লাহও তোমার রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। তুমি আল্লাহর (অধিকারসমূহ) স্মরণ রাখো, তাহলে তুমি তাঁকে তোমার সম্মুখে পাবে। যখন তুমি চাইবে, তখন আল্লাহর কাছেই চাও। আর যখন তুমি সাহায্য প্রার্থনা করবে, তখন একমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা কর। আর এ কথা জেনে রাখ যে, যদি সমস্ত উম্মত তোমার উপকার করার জন্য একত্রিত হয়ে যায়, তবে ততটুকুই উপকার করতে পারবে, যতটুকু আল্লাহ তোমার (ভাগ্যে) লিখে রেখেছেন। আর তারা যদি তোমার ক্ষতি করার জন্য একত্রিত হয়ে যায়, তবে ততটুকুই ক্ষতি করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার (ভাগ্যে) লিখে রেখেছেন। কলমসমূহ উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং খাতাসমূহ (ভাগ্যলিপি) শুকিয়ে গেছে।
(তিরমিযী ২৫১৬)
৫৬. ইসলাম পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। কোন কিছু সংযোজনন বা
বিয়োজন করার সুযোগ নেই।
عَن عَبْدِ اللهِ بْنِ
عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِنَّهُ لَمْ يَكُنْ نَبِىٌّ
قَبْلِى إِلاَّ كَانَ حَقًّا عَلَيْهِ أَنْ يَدُلَّ أُمَّتَهُ عَلَى خَيْرِ مَا يَعْلَمُهُ
لَهُمْ وَيُنْذِرَهُمْ شَرَّ مَا يَعْلَمُهُ لَهُمْ
আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস রা. কর্তৃক বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, আমার পূর্বেও যে সকল আম্বিয়া ছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকের উপর এই দায়িত্ব ছিল যে, তাঁরা যা উম্মতের জন্য উত্তম বলে জানবেন, তা তাদেরকে অবহিত করবেন এবং যা তাদের জন্য মন্দ বলে জানবেন, তা হতে তাদেরকে সতর্ক করবেন।[১]
অন্য এক বর্ণনায় আছে,
তিনি বলেছেন, প্রত্যেক নবীর জন্য জরুরী যে, তিনি তাঁর উম্মতকে সেই কাজ বাতলে দেবেন, যা তিনি তাদের জন্য সবচেয়ে ভাল বলে জানবেন।[২]
[১] আহমাদ ৬৫০৩, মুসলিম ৪৮৮২। [২] আল-ইহকাম ১/৯০।
৫৭. সৌভাগ্যবানরাই দ্বীনি ইলম অর্জন করতে পারে।
وَعَن مُعَاوِيةَ
قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ يُرِدِ اللهُ بِهِ خَيْراً يُفَقِّهْهُ فِي
الدِّينِ متفقٌ عَلَيْهِ
মুআবিয়াহ রা. হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকেই দ্বীনী জ্ঞান দান করেন।
(বুখারী ৭১, ৩১১৬, ৭৩১২, মুসলিম ২৪৩৬, ২৪৩৯, ইবনে মাজাহ)
৫৮. মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবান করার ফযিলত।
عَنْ سَهْلِ بْنِ
سَعْدٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ لِعَلِيٍّ فَوَاللهِ لأَنْ يَهْدِيَ اللهُ
بِكَ رَجُلاً وَاحِداً خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ يَكُونَ لَكَ حُمْرُ النَّعَمِ متفقٌ
عَلَيْهِ
সাহল ইবনে সা’দ রা. হতে বর্ণিত,
নবী সা. (খায়বার যুদ্ধের সময়) আলী (রাঃ) কে সম্বোধন করে বললেন, আল্লাহর শপথ! তোমার দ্বারা একটি মানুষকেও যদি আল্লাহ সৎপথ দেখান, তবে তা (আরবের মহামূল্যবান) লাল উট অপেক্ষা উত্তম হবে।
(বুখারী ৩০০৯, ৩৭০১, ৪২১০, মুসলিম ৬৩৭৬)
৫৯. লজ্জা পাপ থেকে রক্ষা করে।
حَدَّثَنَا أَبُو مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله
عليه وسلم " إِنَّ مِمَّا أَدْرَكَ النَّاسُ مِنْ كَلاَمِ النُّبُوَّةِ
الأُولَى إِذَا لَمْ تَسْتَحِي فَاصْنَعْ مَا شِئْتَ
আবূ মাস’ঊদ রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
নবী সা. বলেছেনঃ পূর্ববর্তী নবীদের (নবীদের) নাসীহাত থেকে মানুষ যা লাভ করেছে তার একটা হলো, যদি তুমি লজ্জাই না কর, তবে যা ইচ্ছে তাই কর।
[বুখারী, তাওহিদ প্রকাশনী হা/৬১২০,আধুনিক প্রকাশনী- ৫৬৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৭৭)
৬০. অন্যায় দেখলে করণীয় ।
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ
الْخُدْرِيّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْت رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه و
سلم يَقُولُ: "مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ،
فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ،
وَذَلِكَ أَضْعَفُ الْإِيمَانِ رَوَاهُ
مُسْلِمٌ.
আবূ সাঈদ খুদরী রা. হতে বর্ণিত হয়েছে,
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সা. বলেছেন: "তোমাদের মধ্যে কেউ কোন অন্যায় দেখলে তা সে তার হাত দ্বারা প্রতিহত করবে, যদি তা সম্ভব না হয় তবে মুখ দ্বারা প্রতিহত করবে, তাও যদি না করতে পারে তাহলে অন্তর দিয়ে তা ঘৃণা করবে। আর এ হচ্ছে (অন্তর দিয়ে প্রতিহত করা) দুর্বলতম ঈমান।"
[মুসলিম: ৪৯]
সংকলনে,
এইচ.এম.
হুজ্জাতুল্লাহ
অধ্যায়নরত,
আল-হাদিস
এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ
ইসলামী
বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া।
No comments
Post a Comment