আল-কুরআন: উপদেশমূলক গাইড বুক, পর্ব -০১


আল-কুরআন: উপদেশমূলক গাইড বুক

পর্ব -০১

ভূমিকা:

আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে নাবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন মানুষদেরকে সঠিক কল্যাণের পথের দিশা দেয়ার জন্য সেই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ নাবী রাসূল মুহাম্মদ সা. এর উপর নাযিল করেছেন মহাগ্রন্থ আল-কুরআনমানুষের হেদায়াতের জন্য যেখানে মানব জাতীর কল্যাণ অকল্যাণকর সকল বিষয় বর্ণনা করা হয়েছে বর্ণনা করা হয়েছে মানুষের জন্য কল্যাণকর বহু উপদেশ উপদেশ দেয়া হয়েছে আদেশ নিষেধের মাধ্যমে  

তাই প্রথম পর্বে আল-কুরআনে বর্ণিত নিষেধাজ্ঞামূলক উপদেশ নিয়ে আলোচনা করবো, ইনশা আল্লাহ

. শিরক করিও না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 وَ اِذۡ قَالَ لُقۡمٰنُ لِابۡنِهٖ وَ هُوَ یَعِظُهٗ یٰبُنَیَّ لَا تُشۡرِکۡ بِاللّٰهِ ؕؔ اِنَّ الشِّرۡکَ لَظُلۡمٌ عَظِیۡمٌ

আর স্মরণ কর, যখন লুকমান তার পুত্রকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছিল, ‘প্রিয় বৎস, আল্লাহর সাথে শিরক করো না; নিশ্চয় শিরক হল বড় যুলম'

( সুরা লুকমান,আয়াত-13 )

 اِنَّ اللّٰهَ لَا یَغۡفِرُ اَنۡ یُّشۡرَکَ بِهٖ وَ یَغۡفِرُ مَا دُوۡنَ ذٰلِکَ لِمَنۡ یَّشَآءُ ۚ وَ مَنۡ یُّشۡرِکۡ بِاللّٰهِ فَقَدِ افۡتَرٰۤی اِثۡمًا عَظِیۡمًا

নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করা ক্ষমা করবেন না। এটা ছাড়া অন্য সব যাকে ইচ্ছে মাফ করবেন এবং যে আল্লাহর সাথে শরীক করল, সে এক মহা অপবাদ আরোপ করল।

( সুরা নিসা, আয়াত-48 )

 اِنَّهٗ مَنۡ یُّشۡرِکۡ بِاللّٰهِ فَقَدۡ حَرَّمَ اللّٰهُ عَلَیۡهِ الۡجَنَّۃَ وَ مَاۡوٰىهُ النَّارُ ؕ وَ مَا لِلظّٰلِمِیۡنَ مِنۡ اَنۡصَارٍ 

 নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি আল্লাহর অংশী স্থাপন করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন এবং তার বাসস্থান হবে জাহান্নাম; এবং এরূপ অত্যাচারীদের জন্য কোন সাহায্যকারী থাকবেনা।

( সুরা মায়েদা, আয়াত-72 )

. আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ডেকো না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 وَ لَا تَدۡعُ مَعَ اللّٰهِ اِلٰـهًا اٰخَرَ ۘ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ۟ کُلُّ شَیۡءٍ هَالِکٌ اِلَّا وَجۡهَهٗ ؕ لَهُ الۡحُکۡمُ وَ اِلَیۡهِ تُرۡجَعُوۡنَ

আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোন ইলাহকে ডেকো না, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন ইলাহ নেই, তাঁর (সত্তা) ছাড়া সকল কিছুই ধ্বংসশীল। বিধান তাঁরই, আর তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে। 

( সূরা কাসাস , আয়াত-88 )

.সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রণ করি না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 لَا تَلۡبِسُوا الۡحَقَّ بِالۡبَاطِلِ وَ تَکۡتُمُوا الۡحَقَّ وَ اَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ

 তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করো না।

( সূরা বাকারা  আয়াত-42 )

. অশান্তি সৃষ্টি করি না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَ لَا تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ بَعۡدَ اِصۡلَاحِهَا

আর যমীনে শান্তি স্থাপনের পর তোমরা সেখানে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না।

( সুরা আরাফ আয়াত-56 )

 لَا تَعۡثَوۡا فِی الۡاَرۡضِ مُفۡسِدِیۡنَ

 পৃথিবীতে বিবাদ-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করো না।

   ( সূরা বাকারাহ, আয়াত-60 )

لَا تَبۡغِ الۡفَسَادَ فِی الۡاَرۡضِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یُحِبُّ الۡمُفۡسِدِیۡنَ

 পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চেয়ো না। আল্লাহ অবশ্যই বিপর্যয় সৃষ্টিকারীকে ভালবাসেন না।

( সুরা আল-কাসাস,আয়াত-88 )

কারো অন্ধ অনুসরণ করিও  না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَ اِذَا قِیۡلَ لَهُمُ اتَّبِعُوۡا مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰهُ قَالُوۡا بَلۡ نَتَّبِعُ مَاۤ اَلۡفَیۡنَا عَلَیۡهِ اٰبَآءَنَا ؕ اَوَ لَوۡ کَانَ اٰبَآؤُهُمۡ لَا یَعۡقِلُوۡنَ شَیۡئًا وَّ لَا یَهۡتَدُوۡنَ

আর যখন তাদের বলা হয়, ‘আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তোমরা তার অনুসরণ কর।তখন তারা বলে, ‘(না-না  ) বরং আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে যাতে (মতামত ধর্মাদর্শে ) পেয়েছি তার অনুসরণ করব।যদিও তাদের পিতৃপুরুষগণ কিছুই বুঝত না এবং তারা সৎ পথেও ছিল না।

( সূরা বাকারাহ, আয়াত-170 )

. শয়তানের অনুসরণ করি না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ کُلُوۡا مِمَّا فِی الۡاَرۡضِ حَلٰلًا طَیِّبًا ۫ۖ وَّ لَا تَتَّبِعُوۡا خُطُوٰتِ الشَّیۡطٰنِ ؕ اِنَّهٗ لَکُمۡ عَدُوٌّ مُّبِیۡنٌ 

হে মানুষ! তোমরা খাও যমীনে যা কিছু বৈধ পবিত্র খাদ্যবস্তু রয়েছে তা থেকে। আর তোমরা শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।

( সুরা বাকারাহ,আয়াত-168 )

 

. অন্যায়ভাবে কারো সম্পদ ভক্ষণ করিও না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَ لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ وَ تُدۡلُوۡا بِهَاۤ اِلَی الۡحُکَّامِ لِتَاۡکُلُوۡا فَرِیۡقًا مِّنۡ اَمۡوَالِ النَّاسِ بِالۡاِثۡمِ وَ اَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ

তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের ধন অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষের ধন-সম্পদের কিয়দংশ জেনেশুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে বিচারকগণকে ঘুষ দিও না।

( সুরা বাকারা, আয়াত-188 )

. সুদ খেয়ো না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ وَ ذَرُوۡا مَا بَقِیَ مِنَ الرِّبٰۤوا اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ 

হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সূদের যা বকেয়া আছে তা বর্জন কর; যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।

( সুরা বাকারা, আয়াত-278 )

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوا الرِّبٰۤوا اَضۡعَافًا مُّضٰعَفَۃً ۪ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ

হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা ক্রমবর্ধমান হারে দ্বিগুণ-চতুর্গুণ বা চক্রবৃদ্ধি হারে ) সূদ খেয়ো না, এবং আল্লাহকে ভয় কর, তাহলে তোমরা সফলকাম হতে পারবে।

( সুরা আলে-ইমরান, আয়াত-130 )

 اَلَّذِیۡنَ یَاۡکُلُوۡنَ الرِّبٰوا لَا یَقُوۡمُوۡنَ اِلَّا کَمَا یَقُوۡمُ الَّذِیۡ یَتَخَبَّطُهُ الشَّیۡطٰنُ مِنَ الۡمَسِّ ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّهُمۡ قَالُوۡۤا اِنَّمَا الۡبَیۡعُ مِثۡلُ الرِّبٰوا ۘ وَ اَحَلَّ اللّٰهُ الۡبَیۡعَ وَ حَرَّمَ الرِّبٰوا

  যারা সূদ খায়, তারা (কিয়ামতে) সেই ব্যক্তির মত দন্ডায়মান হবে, যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে দিয়েছে। তা জন্য যে, তারা বলে, ‘ব্যবসা তো সূদের মতই। অথচ আল্লাহ ব্যবসাকে বৈধ সূদকে অবৈধ করেছেন।

( সুরা বাকারাহ, আয়াত-275 )

 یَمۡحَقُ اللّٰهُ الرِّبٰوا وَ یُرۡبِی الصَّدَقٰتِ ؕ وَ اللّٰهُ لَا یُحِبُّ کُلَّ کَفَّارٍ اَثِیۡمٍ

আল্লাহ্ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দানকে বর্ধিত করেন। আর আল্লাহ কোন অধিক কুফরকারী, পাপীকে ভালবাসেন না।

( সুরা বাকারা, আয়াত-276 )

.দান-সাদকাহ নষ্ট করে দিও না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تُبۡطِلُوۡا صَدَقٰتِکُمۡ بِالۡمَنِّ وَ الۡاَذٰی ۙ کَالَّذِیۡ یُنۡفِقُ مَالَهٗ رِئَآءَ النَّاسِ وَ لَا یُؤۡمِنُ بِاللّٰهِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِؕ فَمَثَلُهٗ کَمَثَلِ صَفۡوَانٍ عَلَیۡهِ تُرَابٌ فَاَصَابَهٗ وَابِلٌ فَتَرَکَهٗ صَلۡدًا ؕ لَا یَقۡدِرُوۡنَ عَلٰی شَیۡءٍ مِّمَّا کَسَبُوۡا ؕ وَ اللّٰهُ لَا یَهۡدِی الۡقَوۡمَ الۡکٰفِرِیۡنَ 

হে মুমিনগণ! দানের কথা বলে বেড়িয়ে এবং কষ্ট দিয়ে তোমরা তোমাদের দানকে ব্যক্তির ন্যায় নিস্ফল করো না যে নিজের সম্পদ লোক দেখানোর জন্য ব্যয় করে থাকে এবং আল্লাহ্ আখেরাতে ঈমান রাখে না। ফলে তার উপমা হলো এমন একটি মসৃণ পাথর, যার উপর কিছু মাটি থাকে, তারপর প্রবল বৃষ্টিপাত সেটাকে পরিস্কার করে রেখে দেয়। যা তারা উপার্জন করেছে তার কিছুই তারা তাদের কাজে লাগানোর ক্ষমতা রাখে না। আর আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না।

( সুরা বাকারাহ, আয়াত-264 )

১০. একতাবদ্ধ থেকো,পরস্পর বিচ্ছিন্ন  হয়ো না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 وَ اعۡتَصِمُوۡا بِحَبۡلِ اللّٰهِ جَمِیۡعًا وَّ لَا تَفَرَّقُوۡ

আর তোমরা সকলে আল্লাহ্ রশি দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।

( সুরা আলে-ইমরান-103 )

اِنَّ الَّذِیۡنَ فَرَّقُوۡا دِیۡنَهُمۡ وَ کَانُوۡا شِیَعًا لَّسۡتَ مِنۡهُمۡ فِیۡ شَیۡءٍ ؕ اِنَّمَاۤ اَمۡرُهُمۡ اِلَی اللّٰهِ ثُمَّ یُنَبِّئُهُمۡ بِمَا کَانُوۡا یَفۡعَلُوۡنَ

নিশ্চয় যারা তাদের দ্বীনকে বিচ্ছিন্ন করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে, তাদের কোন দায়িত্ব আপনার নয়; তাদের বিষয় তো আল্লাহ্ নিকট তারপর তিনি তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে জানাবেন।

( সুরা আনআম, আয়াত-159 )

১১. অহংকার বশত যমীনে চলা-ফেরা করিও না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 وَ لَا تُصَعِّرۡ خَدَّکَ لِلنَّاسِ وَ لَا تَمۡشِ فِی الۡاَرۡضِ مَرَحًا ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یُحِبُّ کُلَّ مُخۡتَالٍ فَخُوۡرٍ


অহংকারের বশবর্তী হয়ে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা কর না, আর পৃথিবীতে গর্বভরে চলাফেরা কর না, নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না

( সূরা লোকমান, আয়াত-18 )

১২. বিনা অনুমতিতে কারো ঘরে প্রবেশ কনিও না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَدۡخُلُوۡا بُیُوۡتًا غَیۡرَ بُیُوۡتِکُمۡ حَتّٰی تَسۡتَاۡنِسُوۡا وَ تُسَلِّمُوۡا عَلٰۤی اَهۡلِهَا ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَذَکَّرُوۡنَ 

হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ছাড়া অন্যের গৃহে প্রবেশ করো না, অনুমতি প্রার্থনা এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম দেয়া ব্যতীত। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর যাতে তোমরা উপদেশ লাভ কর।

( সুরা নুর, আয়াত-27 )

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لِیَسۡتَاۡذِنۡکُمُ الَّذِیۡنَ مَلَکَتۡ اَیۡمَانُکُمۡ وَ الَّذِیۡنَ لَمۡ یَبۡلُغُوا الۡحُلُمَ مِنۡکُمۡ ثَلٰثَ مَرّٰتٍ ؕ مِنۡ قَبۡلِ صَلٰوۃِ الۡفَجۡرِ وَ حِیۡنَ تَضَعُوۡنَ ثِیَابَکُمۡ مِّنَ الظَّهِیۡرَۃِ وَ مِنۡۢ بَعۡدِ صَلٰوۃِ الۡعِشَآءِ ۟ؕ ثَلٰثُ عَوۡرٰتٍ لَّکُمۡ ؕ

হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসিগণ এবং তোমাদের মধ্যে যারা বয়ঃপ্রাপ্ত হয়নি (নাবালক), তারা যেন তোমাদের কক্ষে প্রবেশ করতে তিনটি সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে; ফজরের নামাযের পূর্বে, দ্বিপ্রহরে যখন তোমরা বিশ্রামের উদ্দেশ্যে বাহ্যাবরণ খুলে রাখ তখন এবং এশার নামাযের পর। তিন সময় তোমাদের গোপনীয়তা অবলম্বনের সময়।

( সুরা নুর, আয়াত-58 )

১৩. না জেনে শুধু অনুমান করে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিও না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 وَ لَا تَقۡفُ مَا لَیۡسَ لَکَ بِهٖ عِلۡمٌ ؕ اِنَّ السَّمۡعَ وَ الۡبَصَرَ وَ الۡفُؤَادَ کُلُّ اُولٰٓئِکَ کَانَ عَنۡهُ مَسۡـُٔوۡلًا 

যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সেই বিষয়ে অনুমান দ্বারা পরিচালিত হয়ো না। নিশ্চয় কর্ণ, চক্ষু হৃদয় ওদের প্রত্যেকের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হবে।

( সুরা বানী ইসরাঈল,আয়াত-36 )

১৪. অবৈধ যৌনাচারে লিপ্ত হয়ো না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَ لَا تَقۡرَبُوا الزِّنٰۤی اِنَّهٗ کَانَ فَاحِشَۃً ؕ وَ سَآءَ سَبِیۡلًا

আর যিনার ধারে-কাছেও যেও না, নিশ্চয় তা অশ্লীল নিকৃষ্ট আচরণ।

( সূরা ইসরা , আয়াত-32 )

১৫. অপচয় করিও না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَ لَا تُبَذِّرۡ تَبۡذِیۡرًا 

আর কিছুতেই অপব্যয় করো না।

( সুরা ইসরা, আয়াত-26 )

اِنَّ الۡمُبَذِّرِیۡنَ کَانُوۡۤا اِخۡوَانَ الشَّیٰطِیۡنِ ؕ وَ کَانَ الشَّیۡطٰنُ لِرَبِّهٖ کَفُوۡرًا

নিশ্চয় যারা অপব্যয় করে, তারা শয়তানের ভাই আর শয়তান তার প্রতিপালকের প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। 

( সুরা ইসরা, আয়াত-27 )

 وَ لَا تَجۡعَلۡ یَدَکَ مَغۡلُوۡلَۃً اِلٰی عُنُقِکَ وَ لَا تَبۡسُطۡهَا کُلَّ الۡبَسۡطِ فَتَقۡعُدَ مَلُوۡمًا مَّحۡسُوۡرًا 

তোমার হাতকে তোমার গলার সাথে বেঁধে দিও না, আর তা একেবারে প্রসারিত করেও দিওনা, তা করলে তুমি তিরস্কৃত নিঃস্ব হয়ে বসে পড়বে।

( সুরা ইসরা, আয়াত-29 )

 یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ خُذُوۡا زِیۡنَتَکُمۡ عِنۡدَ کُلِّ مَسۡجِدٍ وَّ کُلُوۡا وَ اشۡرَبُوۡا وَ لَا تُسۡرِفُوۡا ۚ اِنَّهٗ لَا یُحِبُّ الۡمُسۡرِفِیۡنَ

হে বনী আদম, তোমরা প্রতি সালাতে তোমাদের বেশ-ভূষা গ্রহণ কর এবং খাও, পান কর অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না।

( সূরা রাফ, আয়াত-31 )

১৬. মাতা-পিতার সাথে কঠোর ভাষায় কথা বলিও না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 اِمَّا یَبۡلُغَنَّ عِنۡدَکَ الۡکِبَرَ اَحَدُهُمَاۤ اَوۡ کِلٰهُمَا فَلَا تَقُلۡ لَّهُمَاۤ اُفٍّ وَّ لَا تَنۡهَرۡهُمَا وَ قُلۡ لَّهُمَا قَوۡلًا کَرِیۡمًا 

 তারা একজন বা উভয়ই তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদেরকে উফ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না; তাদের সাথে সম্মানসূচক কথা বল।

( সুরা ইসরা, আয়াত-23 )

১৭. আল্লাহ্তাআলার অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়ো না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یَغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّهٗ هُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ 

বলুন, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ; আল্লাহ্ অনুগ্রহ থেকে হতাশ হয়ো না, নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

( সুরা যুমার, আয়াত-53 )

১৮. ইয়াতিমের সম্পদের নিকটবর্তী হয়ো না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 وَ لَا تَقۡرَبُوۡا مَالَ الۡیَتِیۡمِ اِلَّا بِالَّتِیۡ هِیَ اَحۡسَنُ حَتّٰی یَبۡلُغَ اَشُدَّهٗ ۚ

(ইয়াতীমরা) বয়ঃপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্য ছাড়া ইয়াতীমদের সম্পত্তির নিকটবর্তী হয়ো না।

( সুরা আনআম, আয়াত-152 )

১৯. ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপাস্যদের গালমন্দ করো না।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 وَ لَا تَسُبُّوا الَّذِیۡنَ یَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ فَیَسُبُّوا اللّٰهَ عَدۡوًۢا بِغَیۡرِ عِلۡمٍ ؕ کَذٰلِکَ زَیَّنَّا لِکُلِّ اُمَّۃٍ عَمَلَهُمۡ ۪ ثُمَّ اِلٰی رَبِّهِمۡ مَّرۡجِعُهُمۡ فَیُنَبِّئُهُمۡ بِمَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ 

এরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের ইবাদাত (পূজা-অর্চনা) করে তোমরা তাদেরকে গালাগালি করনা, তাহলে তারা অজ্ঞতা বশতঃ বৈরীভাবে আল্লাহকেই গালাগালি দিতে শুরু করবে। আমিতো রূপেই প্রতিটি জনগোষ্ঠীর জন্য তাদের আমলকে চাকচিক্যময় করে দিয়েছি। শেষ পর্যন্ত তাদেরকে তাদের রবের কাছে ফিরে যেতে হবে, তখন তারা কি কি কাজ করেছিল তা তিনি তাদেরকে জানিয়ে দিবেন।

( সুরা আনআম, আয়াত-108 )

২০. পাপ কাজে সহযোগিতা করিও না

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَ لَا تَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡاِثۡمِ وَ الۡعُدۡوَانِ ۪ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ

পাপ সীমালংঘনের কাজে একে অন্যের সাহায্য করো না। আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তিদানে অতি কঠোর।

( সুরা মায়িদা, আয়াত-02 )

উপসংহার:

যে সকল কাজ মানুষের জন্য অকল্যাণকর বা যে সকল কাজে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে এমন কাজ করা যাবে না আল-কুরআন সে কাজ না করতে উপদেশ দিয়েছে , বরং শাস্তির ব্যাপারেও সতর্ক করেছে

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এসকল উপদেশ মেনে চলার তাওফীক দান করুন, আমীন

 

 

 

 

 

 

 

 

 


No comments

Powered by Blogger.