ইসলামী সংক্ষীপ্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব-০২


 

 [১৮]- আমল ছাড়া ঈমান কি কোনো কাজে আসবে ?

 ঈমান বলা হয় মুখের স্বীকৃতি , কলবের সত্যায়ণ ও আমলে বাস্তবায়ণকে ।

একজন মুমিনের ভেতর অবশ্যই ঈমান এবং আমল উভয়ের সমন্বয় থাকতে হবে।

যেমন আল্লাহর বাণী,

وَمَن يَأۡتِهِۦ مُؤۡمِنٗا قَدۡ عَمِلَ ٱلصَّٰلِحَٰتِ فَأُوْلَٰٓئِكَ لَهُمُ ٱلدَّرَجَٰتُ ٱلۡعُلَىٰ

আর যারা তাঁর নিকট বিশ্বাসী হয়ে ও সৎকর্ম করে উপস্থিত হবে, তাদের জন্য আছে সমুচ্চ মর্যাদাসমূহ।

(ত্ব-হা ৭৫)

উক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ জান্নাতে প্রবেশের জন্য ঈমান এবং আমল উভয়ের শর্তারোপ করেছেন।

[১৯]-'ইহ্‌সান কাকে বলে ?

'ইহ্‌সান'-এর সংজ্ঞায় রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ

ইহ্‌সান অর্থ: এমনভাবে আল্লাহ্‌র ইবাদত করা, যেন তুমি তাঁকে দেখছ। যদি তুমি তাঁকে দেখতে সক্ষম না হও, তাহলে মনে করবে, তিনি তোমাকে দেখছেন।

( সহিহ মুসলিম -৮ )

[২০]-একজন মুমিনের আমল কখন বন্ধ হয়ে যায়?

কেবলমাত্র মৃত্যুর মাধ্যমে একজন মুমিনের আমল বন্ধ হয়ে যায়।

 মহান আল্লাহ বলেন,

 وَٱعۡبُدۡ رَبَّكَ حَتَّىٰ يَأۡتِيَكَ ٱلۡيَقِينُ

মৃত্যু অবধি আপনি আপনার পালনকর্তার ইবাদত করুন।

একজন মানুষ মারা গেলে তাঁর সকল আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে পূর্বের আমলের সোয়াব চলমান থাকে । 

যেমন হাদীসে এসেছে

রাসুল সা বলেন,

إِذَا مَاتَ الإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلاَّ مِنْ ثَلاَثَةٍ إِلاَّ مِنْ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ

মানুষ যখন মারা যায়, তখন তিনটি আমল ব্যতীত তার সমস্ত আমল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়ঃ ছাদাক্বায়ে জারিয়াহ, তার রেখে যাওয়া এমন ইলম, যদ্বারা উপকার সাধিত হয় এবং এমন সৎ সন্তান, যে তার জন্য দো‘আ করে।

( মুসলিম-৪৩১০ )

 তাছাড়া নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবদ্দশায় কখনই আমল পরিত্যাগ করেন নি।

[২১]-অলী-আওলিয়ারা কি গায়েবের খবর জানেন? তারা কি মৃতকে জীবিত করতে পারেন?

একমাত্র আল্লাহ ছাড়া গায়েবের খবর আর কেউই জানে না। মহান আল্লাহ বলেন,

وَلَوۡ كُنتُ أَعۡلَمُ ٱلۡغَيۡبَ لَٱسۡتَكۡثَرۡتُ مِنَ ٱلۡخَيۡرِ وَمَا مَسَّنِيَ ٱلسُّوٓءُ

আর আমি যদি গায়বের কথা জানতাম, তাহলে বহু কল্যাণ অর্জন করে নিতে পারতাম এবং কোনো অকল্যাণ আমাকে স্পর্শ করতে পারত না।

'রাফ ১৮৮ )

 অনুরূপভাবে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া মৃতকে আর কেউই জীবিত করতে পারে না।

আল্লাহ বলেন,

قُلِ ٱللَّهُ يُحۡيِيكُمۡ ثُمَّ يُمِيتُكُمۡ ثُمَّ يَجۡمَعُكُمۡ إِلَىٰ يَوۡمِ ٱلۡقِيَٰمَةِ لَا رَيۡبَ فِيهِ وَلَٰكِنَّ أَكۡثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعۡلَمُونَ

পনি বলুন, আল্লাহই তোমাদেরকে জীবন দান করেন, অতঃপর মৃত্যু দেন। অতঃপর তিনিই তোমাদেরকে কিয়ামতের দিন একত্রিত করবেন, যে দিনের ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বুঝে না।

জাছিয়াহ ২৬ )

চার ইমামের সকলেই এ মর্মে একমত পোষণ করেছেন, যে ব্যক্তি দাবি করবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম গায়েবের খবর রাখেন অথবা মৃতকে জীবিত করেন, সে মুরতাদ অর্থাৎ ইসলামের গণ্ডির বাইরে। কেননা সে এর মাধ্যমে আল্লাহ্‌র উপর মিথ্যারোপ করে। কারণ আল্লাহ তাঁর রাসূলকে মানুষ এবং জিন জাতিকে নিম্নোক্ত বাণী পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন

আল্লাহ তায়ালা বলেন

 قُل لَّآ أَقُولُ لَكُمۡ عِندِي خَزَآئِنُ ٱللَّهِ وَلَآ أَعۡلَمُ ٱلۡغَيۡبَ وَلَآ أَقُولُ لَكُمۡ إِنِّي مَلَكٌ

আপনি বলুন, আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহ্‌র ভাণ্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয়ও অবগত নই। আমি এমনও বলি না যে, আমি ফেরেশতা।

 আন‘আম ৫০ )

তবে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অদৃশ্যের খবর ঠিক ততটুকুই জানেন, যতটুকু আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে জানান।

[২২]- ঈসা আলাইহিস সালাম মৃতদেরকে জীবিত করতে পারতেন এবং মানুষ তাদের বাড়িতে যা কিছু সঞ্চয় করত, তা জানতেন। প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে অন্যান্য আউলিয়াদের দ্বারা কি এমনটি সম্ভব?

এটি আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূল ঈসা আলাইহিস সালাম-এর জন্য একটি স্বতন্ত্র্য অলৌকিক ঘটনা হিসাবে নির্ধারণ করেছেন, যেটি অন্য কারো জন্য করেন নি। আর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈসা আলাইহিস সালাম-এর চেয়ে মর্যাদাবান হওয়া সত্ত্বেও উক্ত দাবি করেন নি। তাহলে কিভাবে কেউ দাবি করতে পারে যে, আল্লাহ্‌র প্রিয় বান্দারা মৃতদেরকে জীবিত করতে সক্ষম?!

[২৩]- মুমিনগণ জান্নাতে তাঁদের প্রতিপালককে দেখতে পাবেন কি?

হ্যাঁ, মুমিনগণ জান্নাতে তাঁদের প্রতিপালককে দেখতে পাবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وُجُوهٞ يَوۡمَئِذٖ نَّاضِرَةٌ ٢٢ إِلَىٰ رَبِّهَا نَاظِرَةٞ ٢٣ 

সেদিন অনেক মুখমণ্ডল উজ্জ্বল হবে। তারা তাদের পালনকর্তার দিকে তাকিয়ে থাকবে।

 ( কিয়ামাহ ২২-২৩ )

 নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

إِنَّكُمْ تَرَوْنَ رَبَّكُمْ

নিশ্চয়ই তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে (জান্নাতে) দেখবে।      

(বুখারী ও মুসলিম )

 [২৪]- নবী-রাসূল বাদে আল্লাহ্‌র অন্যান্য অলী-আউলিয়া কি ছগীরা এবং কাবীরা গোনাহে পতিত হওয়া থেকে মুক্ত?

নবী-রাসূলগণ ছাড়া কোনো অলী-আউলিয়া ছগীরা এবং কাবীরা গোনাহে পতিত হওয়া থেকে মুক্ত নন।

 [২৫]- ছাহাবায়ে কেরাম (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম)-এর প্রতি আমাদের কর্তব্য কি? তাঁদের কাউকে গালি দেওয়ার হুকুম কি?

সকল সাহাবীকে ভালবাসতে হবে, তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে এবং তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকতে হবে। কেননা মহান আল্লাহ তাঁদের সকলের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন; তাঁদের কাউকেই তিনি তাঁর সন্তুষ্টি থেকে বাদ দেন নি।

 আল্লাহ তায়ালার বাণী,

رَضِيَ ٱللَّهُ عَنۡهُمۡ وَرَضُواْ عَنۡهُۚ

আল্লাহ তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তাঁরাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন।

( মুজাদালাহ ২২ )

অনুরূপভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণকে ভালবাসতে হবে এবং সম্মান করতে হবে। মনে রাখতে হবে, তাঁদের কাউকে গালি দেওয়া সম্পূর্ণ হারাম এবং কাবীরা গোনাহ। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ মুমিনদের মাতা।

মহান আল্লাহ বলেন,

وَأَزۡوَٰجُهُۥٓ أُمَّهَٰتُهُمۡ

তাঁর স্ত্রীগণ তাদের মা।

 ( আহযাব ৬ )

 আয়াতে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সকল স্ত্রী মুমিনদের মাতা; তাঁদের কাউকে এই হুকুম থেকে বাদ দেওয়া হয় নি। ছাহাবায়ে কেরাম (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম) কে গালি দেওয়া প্রসঙ্গে আবূ সাঈদ খুদরী (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

لَا تَسُبُّوا أَصْحَابِي فَلَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا بَلَغَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلَا نَصِيفَهُ

তোমরা আমার সাহাবীগণকে গালি দিওনা। কেননা তোমাদের কেউ যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ আল্লাহ্‌র রাস্তায় ব্যয় করে, তথাপিও সে তাঁদের কোনো একজনের পূর্ণ এক মুদ্দ বা অর্ধ মুদ্দ দান সমপরিমাণ পর্যন্তও পৌঁছতে পারবে না।

( বুখারী ও মুসলিম )

[২৬]-সর্বপ্রথম এবং সর্বশেষ রাসূল কে? নবীগণের পরে সর্বোত্তম মানুষ কে?

সর্বপ্রথম রাসূল হলেন, নূহ আলাইহিস সালাম এবং সর্বশেষ রাসূল হলেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম। নবীগণের পরে সর্বোত্তম মানুষ হলেন, ছাহাবায়ে কেরাম (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম)। তাঁদের মধ্যে সর্বোত্তম হলেন, আবূ বকর (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু), অতঃপর ওমর (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু), অতঃপর উছমান (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু), অতঃপর আলী (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু), অতঃপর অন্যান্য সাহাবী (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম)।

ছাহাবায়ে কেরাম (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম) সবাই চার খলীফার খেলাফতে সন্তুষ্ট ছিলেন। ছাহাবায়ে কেরাম (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম) পরস্পর পরস্পরকে ভালবাসতেন। সে কারণে আলী (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) তিন খলীফার নামানুসারে তাঁর তিন সন্তানের নাম আবূ বকর, ওমর এবং উছমান রাখেন। যে ব্যক্তি বলে যে, ছাহাবায়ে কেরাম (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম) রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরিবারের মুমিনগণকে ভালবাসতেন না, সে মিথ্যা বলে।

[২৭]-কোন ব্যক্তি যদি বিশ্বাস করে যে, কারও পক্ষে মুহাম্মাদ সা-এর শরী‘আত থেকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে,তাহলে তার হুকুম কি ?

যে ব্যক্তি বিশ্বাস করবে যে, কারও পক্ষে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শরী‘আত থেকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে, যেমনিভাবে খিযির আলাইহিস সালাম মূসা আলাইহিস সালাম-এর শরী‘আতের বাইরে ছিলেন, সে কাফের হয়ে যাবে।

 আল্লাহ বলেন,

 وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ

যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন তালাশ করে, কস্মিনকালেও তা তার পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে” 

(আলে ইমরান ৮৫)

সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি দাবি করে যে,সবার জন্য শরিয়ত লাগে না বা অমুক ব্যক্তি অনেক বড় অলী তাঁর জন্য শরীয়ত না, তাহলে তার ঈমান থাকবে না।

 [২৮]-আল্লাহ্‌র অলী-আউলিয়া এবং অন্যান্য মৃতব্যক্তি কি কোনো সাহায্য প্রার্থনাকারীর ডাকে সাড়া দেন?

আল্লাহ্‌র অলী-আউলিয়া এবং অন্যান্য মৃতব্যক্তি কোনো সাহায্য প্রার্থনাকারী বা আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দেন না। কেননা মহান আল্লাহ বলেন,

وَٱلَّذِينَ تَدۡعُونَ مِن دُونِهِۦ مَا يَمۡلِكُونَ مِن قِطۡمِيرٍ ١٣ إِن تَدۡعُوهُمۡ لَا يَسۡمَعُواْ دُعَآءَكُمۡ وَلَوۡ سَمِعُواْ مَا ٱسۡتَجَابُواْ لَكُمۡۖ وَيَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ يَكۡفُرُونَ بِشِرۡكِكُمۡۚ وَلَا يُنَبِّئُكَ مِثۡلُ خَبِيرٖ ١٤

তাঁর পরিবর্তে তোমরা যাদেরকে ডাক, তারা তুচ্ছ খেজুর বীচির আবরণেরও অধিকারী নয়। তোমরা তাদেরকে ডাকলে তারা তোমাদের সে ডাক শুনে না। আর শুনলেও তোমাদের ডাকে সাড়া দেয় না। কিয়ামতের দিন তারা তোমাদের শির্ক অস্বীকার করবে। বস্তুতঃ আল্লাহ্‌র ন্যায় কেউ তোমাকে অবহিত করতে পারবে না”

 (ফাতির ১৩-১৪)

 উক্ত আয়াতে তাদের নিকট প্রার্থনা করাকে শির্ক আখ্যায়িত করা হয়েছে।

 

[২৯]-আল্লাহ বলেন, ﴿وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا بَلْ أَحْيَاءٌ عِندَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ﴾ আর যারা আল্লাহ্‌র রাহে নিহত হয়, তাদেরকে তুমি কখনো মৃত মনে করো না। বরং তারা তাদের পালনকর্তার নিকট জীবিত এবং রিযিক্বপ্রাপ্ত’ (আলে ইমরান ১৬৯)। উক্ত আয়াতে বর্ণিত ‘আহ্‌ইয়া’ (أَحْيَاءٌ) শব্দের অর্থ কি?

উক্ত আয়াতে ‘আহ্‌ইয়া’ বলতে শহীদগণের স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনের কথা বুঝানো হয়েছে। কেননা আল্লাহ্‌র রাস্তায় শহীদগণের রূহসমূহ জান্নাতে পরম সুখণ্ডশান্তি ভোগ করে থাকে। আর সেজন্যই তো বলা হয়েছে,

عِندَ رَبِّهِمۡ يُرۡزَقُونَ

তারা তাদের পালনকর্তার নিকট রিযিক্বপ্রাপ্ত”

 (আলে ইমরান ১৬৯)

 তবে মনে রাখতে হবে, তাদের মৃত্যু পরবর্তী বারযাখী জীবন বা কবরের জীবন দুনিয়ার জীবনের মত নয়; উভয় জীবনের মধ্যে কোনো প্রকার তুলনা চলবে না। তাছাড়া বারযাখী জীবনে তারা কারো ডাক শোনে এবং জবাব দেয় মর্মে কোনো প্রমাণই নেই।

[৩০]- নাম রাখার ক্ষেত্রে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো দিকে আরবী ‘আবদ’ (দাস) শব্দের সম্বন্ধ যেমনঃ আব্দুন্নবী, আব্দুল হুসাইন ইত্যাদি বৈধ হবে কি?

নাম রাখার ক্ষেত্রে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো দিকে আরবী ‘আবদ’ (দাস) শব্দের সম্বন্ধ হারাম হওয়ার বিষয়ে ইমামগণ একমত পোষণ করেছেন। তাঁদের মতে, এই ধরনের নাম পরিবর্তন করা ওয়াজিব। কেননা ঐ নামগুলির অর্থ হচ্ছে, নবীর বান্দা, হুসাইনের বান্দা। আর মানুষ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো বান্দা হতে পারে না।

উল্লেখ্য যে, আল্লাহ্‌র কাছে সবচেয়ে প্রিয় নাম হচ্ছে, আব্দুল্লাহ এবং আব্দুর রহমান- যার অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ্‌র বান্দা ও রহমানের বান্দা।

 রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

أَحَبُّ الأَسْمَاءِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى عَبْدُ اللَّهِ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ

আল্লাহ্‌র কাছে সবচেয়ে প্রিয় নাম হচ্ছে আব্দুল্লাহ এবং আব্দুর রহমান”

সহিহ মুসলিম ২১৩২ শামেলা

তবে মৃত ব্যক্তিদের নাম পরিবর্তন করতে হবে না।

 

প্রথম পর্বের লিঙ্ক https://alorbhuban.blogspot.com/2021/02/blog-post_24.html

No comments

Powered by Blogger.