সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ সম্পর্কে হাদিস সংকলন




সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ সম্পর্কে হাদিস সংকলন ====


আল্লাহ তায়ালা মানবজাতীকে সঠিক পথের দিশা দেয়ার জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নাবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। তারা মানুষদেরকে তাগুতের পথ পরিহার করে এক আল্লাহর আহবান করতেন।তথা- সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করতেন। সেই ধারাবাহিকতায় নাবী মুহাম্মদ সা. শেষ যামানায় রিসালাতের সেই দায়িক্ত পালন করেছেন এবং তারঁ ইম্মতকে তাঁর অবর্তমানে একাজ করা কথা বলেছেন।    এটা অত্যন্ত কঠিন, তবে মর্যাদাপূর্ণ  কাজ।

নিম্নে এ সম্পর্কে বর্ণিত হাদিস উল্লেখ করা হলো-

প্রথম হাদিস:


- عن أَبي سعيدٍ الخُدْريِّ رضي اللَّه عنه قال : سمِعْتُ رسُولَ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم يقُولُ : مَنْ رَأَى مِنْكُم مُنْكراً فَلْيغيِّرْهُ بِيَدهِ ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطعْ فبِلِسَانِهِ ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبقَلبهِ وَذَلَكَ أَضْعَفُ الإِيمانِ

  رواه مسلم

আবু সা খুদরী রা. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সা. কে বলতে শুনেছি : তোমাদের কেউ যখন কোন খারাপ কাজ হতে দেখবে তখন সে যেন তা হাত দ্বারা পরিবর্তন করে দেয় (অর্থাৎ নিষেধ করবে) যদি সে সামর্থ না রাখে তাহলে তার মুখ দিয়ে। যদি সামর্থও না থাকে তাহলে অন্তর দিয়ে। আর এটা হচ্ছে ঈমানের দুর্বলতর স্তর।              

( মুসলিম )-

দ্বিতীয় হাদিস:


- عنْ أَبِي سَعيد الْخُدريِّ رضي اللَّه عنه عن النبيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قال: أَفْضَلُ الْجِهَادِ كَلِمَةُ عَدْلٍ عندَ سلْطَانٍ جائِرٍ  

رواه أبو داود ، والترمذي وقال: حديثٌ حسنٌ

আবু সা আল খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সা. বলেছেন: যালেম শাসকের সামনে ইনসাফের কথা বলা উত্তম জিহাদ।

( আবু দাউদ তিরমিজী, ইমাম তিরমিজী হাদীসটিকে হাসান বলে মন্তব্য করেছেন )

তৃতীয় হাদিস:

عَنْ حذيفةَ رضي اللَّه عنه أَنَّ النبي صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قال : والَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَتَأْمُرُنَّ بالْمعرُوفِ ، ولَتَنْهَوُنَّ عَنِ المُنْكَرِ ، أَوْ لَيُوشِكَنَّ اللَّه أَنْ يَبْعثَ عَلَيْكمْ عِقَاباً مِنْهُ ، ثُمَّ تَدْعُونَهُ فَلاَ يُسْتَجابُ لَكُمْ

رواه الترمذي وقال : حديثٌ حسنٌ

হুজাইফা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সা.বলেছেন: সেই সত্ত্বার কসম, যার হাতে আমার জীবন, তোমরা অবশ্যই সৎ কাজের আদেশ করবে আর মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে। যদি না কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদের উপর শাস্তি পাঠাবেন। অত:পর তোমরা তাকে ডাকবে আর তোমাদের ডাকের সাড়া দেয়া হবে না।

( তিরমিজী, ইমাম তিরমিজী হাদীসটিকে হাসান বলে মন্তব্য করেছেন )

চতুর্থ হাদিস:

- عن ابنِ مسْعُودٍ رضي اللَّه عنه أَنَّ رسولَ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قال :  مَا مِنَ نَبِيٍّ بعَثَهُ اللَّه في أُمَّةٍ قَبْلِي إِلاَّ كان لَه مِن أُمَّتِهِ حواريُّون وأَصْحَابٌ يَأْخذون بِسُنَّتِهِ ويقْتدُون بأَمْرِه، ثُمَّ إِنَّها تَخْلُفُ مِنْ بعْدِهمْ خُلُوفٌ يقُولُون مَالاَ يفْعلُونَ ، ويفْعَلُون مَالاَ يُؤْمَرون ، فَمَنْ جاهدهُم بِيَدهِ فَهُو مُؤْمِنٌ ، وَمَنْ جاهدهم بقَلْبِهِ فَهُو مُؤْمِنٌ ، ومَنْ جَاهَدهُمْ بِلِسانِهِ فَهُو مُؤْمِنٌ ، وليس وراءَ ذلِك مِن الإِيمانِ حبَّةُ خرْدلٍ

  رواه مسلم

ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন:  আমার পূর্বে আল্লাহ তাআলা কোন জাতির কাছে যে নবীই পাঠিয়েছেন, তাঁর সহযোগিতার জন্য তাদের মধ্য হতে কিছু সাথী থাকত। তারা তাঁর সুন্নতকে আঁকড়ে ধরত এবং তাঁর নির্দেশের অনুসরণ করত। কিন্তু এদের পর এমন কিছু লোকের অভ্যূদয় ঘটল, তারা যা বলত নিজেরা তা করত না। আর এমন সব কাজ করত যার নির্দেশ তাদের দেয়া হয়নি। অতএব তাদের বিপক্ষে যে ব্যক্তি হাত দিয়ে জিহাদ করবে, সে ঈমানদার। যে তাদের সাথে অন্তর দিয়ে জিহাদ করবে সে ঈমানদার। আর যে তাদের সাথে মুখ দিয়ে জিহাদ করবে সে ঈমানদার। তিন অবস্থা ব্যতীত সরিষার দানা পরিমাণ ঈমানও নেই।

( মুসলিম )

 

 

No comments

Powered by Blogger.